Friday, October 4, 2019

Bonedi Barir Durgapujo Banerjee Boro bari Makardah Howrah

ব্যানার্জী বড় বাড়ির পুজো, পুর্বনওপাড়া, মাকড়দহ, হাওড়া।

Durgadalan-Banerjee-Bonedi-House-Makardaha-Howrah
The Banerjee family gathers at the sprawling Durga Dalan of Barobar

হাওড়ার ডোমজুড় ব্লকের মাকড়দহ বহু পুরোনো জনপদ। এখানে রয়েছে বহু প্রাচীন এবং বিখ্যাত মাকড়চন্ডী মন্দির, যার নাম অনুসারে এই জায়গার নাম। জমিদার রামকান্ত কুন্ডুচৌধুরী বর্তমান মন্দিরটি তৈরী করান ১৭৪৩ সালে। যদিও এর বহু আগে থেকেই এই চন্ডী মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল। এই চন্ডী সম্ভবত লোকায়ত দেবী ছিলেন। এই মন্দিরের ইতিহাসের সঙ্গে মঙ্গলকাব্যের যোগ পাওয়া যায়। এককালে এই অঞ্চল দিয়ে সরস্বতী নদী প্রবাহিত হত। আজকের দিনেও এই অঞ্চলের কিছু পুকুর, খাল ইত্যাদির মধ্যে মজে যাওয়া সেই নদীর চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়। লোককথা অনুসারে এই সরস্বতী নদী বেয়ে নৌকা নিয়ে বাণিজ্যে যাওয়ার পথে স্বপ্নাদেশ পেয়ে ধনপতি সদাগরের পুত্র শ্রীমন্ত সদাগর চন্ডীমাতার এই মন্দির তৈরী করান। বর্তমান মন্দিরে রাখা তিনটি পাথর আজও সেই পুরোনো মন্দিরের অস্তিত্বের চিহ্ন বহন করছে।

মহালয়ার দিন সকালে আমি আর বন্ধু অমিতাভ গুপ্ত এসেছিলাম মাকড়দহের ব্যানার্জী বাড়িতে। এবছর আমাদের এখানে আসা এই বাড়ির মেয়ে পুজা ব্যানার্জীর নিমন্ত্রণে। ওদের বাড়ীর বহু পুরোনো দুর্গাপূজার ইতিহাস জেনে নেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। 

ব্যানার্জী বড় বাড়ির পুজো এই অঞ্চলে যথেষ্ট পরিচিত সেটা আসার সময়ই বুঝতে পেরেছিলাম। পথনির্দেশ অনুসারে খুঁজে পেতে কোন অসুবিধে হয়নি। ব্যানার্জী বাড়ি যাবো শুনতেই স্থানীয় মানুষরা সাগ্রহে রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছেন। 

পুর্বনওপাড়ায় একটি পুকুরের পাশ দিয়ে রাস্তা চলে গেছে ব্যানার্জী বাড়িতে। দূর থেকেই চোখে পড়ে সবুজ রঙ করা বড় বাড়ি, সামনে আটচালা শিবমন্দির। কালো কাঠের বিরাট দরজা দেওয়া মূল ফটক পেরিয়েই প্রশস্ত আঙ্গিনা, যদিও বাঁধানো নয়। সেকালের বাড়ির নির্মাণশৈলী মেনে সামনে দুর্গাদালান আর তিনদিক ঘিরে দোতলা বসত বাড়ি। পুরো মাঠ জুড়ে ম্যারাপ বাঁধা। দেবীপক্ষের শুরুতে আসন্ন পুজোর আয়োজনের ব্যাস্ততা শুরু হয়ে গেছে। তিন খিলানের ঠাকুর দালানে প্রতিমা তৈরীর কাজ চলছে। মৃণ্ময়ী থেকে চিণ্ময়ী হয়ে ওঠার চিরন্তন প্রক্রিয়া। বাড়ির পুজোর রীতি মেনে একচালার ঠাকুর। প্রতিমার অঙ্গরাগে গোলাপী রঙের ছোঁয়া। এমনটিই চলে আসছে বহু বছর ধরে। ছুটির দিনে পরিবারের অনেকেই জড়ো হয়েছেন ঠাকুর দালানে। তাঁদের সঙ্গে আলাপচারিতায় উঠে এল এই পরিবার এবং দুর্গাপুজোর অনেক ইতিহাস।

The front of Banerjee Borobari Makardaha with main entrance
Main entrance of Boro bari of Banerjee Family
Durgapujo of Banerjee Borobari Makardaha Howrah
The Shiva Temple opposite the main entrance of Borobari

Durgapuja of Banerjee Borobari Makardaha Howrah
The idol at Barobari
Durgapujo of Mukherjee house Borobari Makardaha Howrah
A little member of the Banerjee family before the idol
ব্যানার্জী বাড়ির দুর্গাপুজা হয়ে আসছে আনুমানিক ২৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে। আনুমানিক শব্দটি ব্যবহার করা হল কারণ দুর্গাপুজার শুরুর সঠিক বছরটি সম্মন্ধে কোন প্রামাণ্য তথ্য পাওয়া যায় নি। তবে এই বাড়ির ইতিহাস জানতে গেলে সময়ের চাকা ঘুরিয়ে আমাদের ফিরে যেতে হবে ২৮০ বছর আগে যখন সুবে বাংলায় নবাবী শাসন চলছে। সেই সময় মসনদে নবাব আলীবর্দী খান।  ১৭৪০ সন নাগাদ উড়িষ্যার দখল নিয়ে তৎকালীন শাসক রুস্তম জঙ এর সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য শুরু হয়। ফলতঃ যুদ্ধ এবং রুস্তম জঙের পতন। এইসময় প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য রুস্তম জঙ শরণ নেন নাগপুরের মারাঠা শাসক রাঘোজী ভোঁসলের। মারাঠাদের সাহায্যে আবার উড়িষ্যা দখল এবং ফের আলিবর্দীর বাহিনীর হাতে পরাজয়ের মধ্যেই এক অন্য সর্বনাশের বীজ বপন হয়। ১৭৪১ সাল থেকে মারাঠা সেনাপতি ভাস্কর পন্ডিতের নেতৃত্বে বাংলার বুকে শুরু হয় বর্গী হানা। পরবর্তী ১০ বছরে বর্গী আক্রমণ বাংলার বুকে অভূতপুর্ব ত্রাস তৈরী করেছিল। অবাধ, লুন্ঠন, হত্যা, ধর্ষণের তান্ডবে গ্রামকে গ্রাম ছারখার হয়ে গিয়েছিল। লোকে প্রাণভয়ে দিগবিদিক জ্ঞানশূণ্য হতে ভিটেমাটি ছেড়ে পালাতে শুরু করেছিল। শোনা যায় এই দশ বছরে বর্গী হানায় বাংলায় প্রায় চার লাখ লোকের প্রাণহানি ঘটে। নবাবের সেনাবাহিনী বহু চেষ্টা করেও বর্গী আক্রমণ ঠেকাতে পারেনি। বাংলার ইতিহাসে এই দশ বছর এক মারাত্মক গণহত্যার কালো অধ্যায় হিসেবেই রয়ে গেছে।

এই প্রসঙ্গ টানার উদ্দেশ্য একটাই। মাকড়দহতে ব্যানার্জী পরিবারের বসবাসের ইতিহাসের সঙ্গে অনুঘটক হিসেবে জড়িয়ে আছে বর্গী আক্রমণের পর্ব। ঠাকুরদালানে বসে সেই কাহিনীই শুনছিলাম পরিবারের এক প্রবীণ সদস্য সৌমেন ব্যানার্জীর মুখে।

মাকড়দহে ব্যানার্জী পরিবারের বসবাসের শুরু হয় আদিপুরুষ জগদীশ বাচস্পতির আগমনের সঙ্গে। আদতে তাঁর নিবাস ছিল হুগলী জেলার শিয়াখালার কাছে বাগান্দা গ্রামে। পদবী বন্দোপাধ্যায় হলেও জগদীশ মহাশয়ের উপাধি ছিল বাচস্পতি। উনি ছিলেন কুলীন ব্রাহ্মণ এবং ইতিহাসের কান্যকুব্জ বা কনৌজ থেকে একসময় বাংলায় আগত ব্রাহ্মণ বংশের উত্তরপুরুষ। শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত হিসেবে গ্রামে পুজা অর্চনা আর যজমানী করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন। খুব সম্ভবতঃ ১৭৪২ সন বা তার কিছু পরে বর্গী আক্রমণের দরুণ তিনি পরিবারসহ ভিটে ছাড়তে বাধ্য হন এবং নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন। সেই সময় তিনি শুধু তাঁর আরাধ্য শালগ্রাম শিলা, যেটি নারায়ণের প্রতিভূ এবং বংশপরম্পরায় পুজিত হয়েছে সেটি আর মা মনসার প্রতীক একটি মনসা গাছের ডাল শুধু সঙ্গে নিতে পেরেছিলেন। বাচস্পতি মহাশয়ের শালগ্রাম শিলাটি হিন্দুশাস্ত্র মতে অতি পবিত্র এবং দুর্লভ অনন্তদেব শিলা। চরম দুঃসময়ে দাঁড়িয়েও তিনি আরাধ্য ইষ্টদেবতাকে হাতছাড়া করেননি। যাত্রার সময় সর্বক্ষণ তিনি শিলাটিকে পরম যত্নে কাপড় দিয়ে বেঁধে নিজের গলায় ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। 

নিরাপদ আশ্র‍্য়ের সন্ধানে ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে তিনি এসে পড়েন সরস্বতী নদীর তীরে এই মাকড়দহ গ্রামে। এখানেই তাঁর যাত্রা শেষ হয়ে  আবার শুরু হয় তাঁর জীবনের নতুন অধ্যায়। মাকড়দহতে তাঁর বসবাস শুরুর পিছনেও কয়েকটি কারণ ছিল বলে আমার মনে হয়েছে। সেই সময় বাংলার পল্লীজীবনে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে থাকত ধর্ম। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার অধিকাংশই নিয়ন্ত্রিত ছিল বিভিন্ন ধর্মীয় অনুশাসনের মাধ্যমে। শুধু পুজোআচ্চাই নয়, সামাজিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যেহেতু ধর্মের সংস্রব ছিল আর ধর্মীয় তথা শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা তথা নিয়ন্তার অধিকারী ছিলেন একমাত্র ব্রাহ্মণকুল, সেই কারণেই সমাজে তাঁদের বিশেষ মর্যাদা দিয়ে রাখা হত। সেইসময়ে এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যাতায়াতের সুযোগ সুবিধা নিতান্তই অল্প ছিল এবং মানুষের জীবন সাধারণতঃ নিজের গ্রামকে ঘিরেই আবর্তিত হত। সেকারণে যে কোন গ্রামে অন্তত একঘর ব্রাহ্মণের বসবাস কাম্য ছিল। এরকম উদাহরণও আছে যে যদি কোন গ্রামে ব্রাহ্মণের অভাব থাকত, গ্রামের স্বচ্ছল ব্যাক্তি, ব্যবসায়ী বা জমিদাররা নিজেরা বা সকলে মিলে উদ্যোগী হয়ে জমিদান করে ব্রাহ্মণের বসত করিয়েছেন। জগদীশ বাচস্পতি মহাশয় যে সময় মাকড়দহতে আসেন সেই সময় সরস্বতী নদীর নৈকট্যের কারণে ব্যাবসাবাণিজ্য এবং মন্দিরের কল্যাণে এই অঞ্চলে যথেষ্ট মানুষের বসবাস ছিল এবং বাইরের লোকের আনাগোনাও লেগে থাকত। বাচস্পতি মহাশয় যখন এই অঞ্চলে এসে উপস্থিত হন সেসময়ে এই অঞ্চলের জমিদারী ছিল হাওড়ার মাহীয়ারির কুন্ডুচৌধুরী বংশের হাতে। সে সময় বাচস্পতি মহাশয়ের মত শাস্ত্রজ্ঞ ব্রাহ্মণের আগমন তাঁদের এবং স্থানীয় মানুষদের কাছে আনন্দের খবর ছিল। সেসময় স্থানটি ব্রাহ্মণবর্জিত থাকায় নিত্যপুজা ও অনান্য ধর্মাচরণের সুবিধার জন্য কুন্ডুচৌধুরীরাই মাকড়দহের পুর্বপ্রান্তে জমি নির্দিষ্ট করে দেন বাচস্পতি মহাশয়ের বসবাসের জন্য। এতে স্থানীয় মানুষদেরও সানন্দ সমর্থন ছিল। সেই শুরু। এই জমিতেই অনন্তদেব শিলা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং নিত্যপুজা শুরু হয়। আজও পুরুষানুক্রমে তাঁর বংশধররা এই ভিটেতেই বসবাস করছেন। জায়গাটি তৎকালীন গ্রামের পুর্বপ্রান্তে এবং নতুন বসতি হওয়ার ক্রমে লোকমুখে পুর্ব্বনওপাড়া নামে পরিচিত হয়। এখানে আসার সময় জগদীশ বাচস্পতি যে মনসা ডালটি সঙ্গে এনেছিলেন সেটি ভিটের অদুরে পুঁতে দেন। কালক্রমে সেটি বড় গাছে রুপান্তরিত হয়ে মনসাতলা নামে পরিচিতি পায়। এপ্রসঙ্গে পরে আরো বিস্তারিত বলছি।

দুর্গাপুজোর শুরু জগদীশ বাচস্পতির হাত ধরেই, তবে শুরুর সঠিক সাল আজ আর জানা যায় না, যেমন ঠিক জানা যায় না ঠিক কবে থেকে এই ভিটেতে তিনি বসবাস শুরু করেন। তবে অনুমান করা যায়, এখানে বসবাস শুরু করার কিছুকাল পরে খানিকটা স্থিতু হয়ে উনি দুর্গাপুজা শুরু করেন। সেই হিসেব দেখতে গেলেও এই পুজোর বয়স ২৫০ বছরের বেশি তো বটেই।

আজকের এই বসতবাটি বা দুর্গাদালান সে সময় ছিল না। মাটির ঘরের আঙ্গিনাতেই হয়ত শুরু হয়েছিল দেবী দুর্গার আবাহন।

এপ্রসঙ্গে সৌমেনবাবুর কাছে পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মের ইতিহাস সম্পর্কে আরো কিছু জানা গেল। জগদীশ বাচস্পতির চার পুত্রসন্তান, রামকৃষ্ণ বিদ্যানিধি, গঙ্গারাম, বলরাম ও অযোধ্যারাম। মৃত্যুর আগে তিনি জ্যেষ্ঠপুত্র রামকৃষ্ণর হাতে পারিবারিক বিগ্রহের নিত্যপুজার ভার দিয়ে যান। আজকের ব্যানার্জী পরিবার এই রামকৃষ্ণের বংশেরই উত্তরসুরী। এঁরই বংশধররা এই আদি ভিটে মনসাতলা এবং আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়েন।

রামকৃষ্ণের জেষ্ঠ্যপুত্র ছিলেন রামকানাই। বস্তুত তাঁর আমল থেকেই ব্যানার্জী পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি শুরু হয়। রামকানাই এবং তাঁর পুত্ররা ব্যবসায়ে প্রভূত অর্থ উপার্জন করেন। রামকানাই তাঁদের আদিভিটে, মনসাতলা ছেড়ে সরে এসে কাছেই অন্য জমিতে বাড়ি বানিয়ে বসবাস শুরু করেন। অনন্তদেবের নিত্যসেবার দায়িত্ব তাঁর উপরেই ন্যস্ত ছিল এবং এই বাড়িতেই তিনি নারায়ণ শিলা প্রতিষ্ঠা করেন। রামকানাই যেহেতু বাচস্পতি মহাশয়ের জেষ্ঠপুত্রের সন্তান ছিলেন এবং নিজেও ছিলেন তাঁর বড় ছেলে, তাঁর তৈরি করা সেই বাড়ি লোকমুখে হয়ে যায় 'বড়বাড়ি'। আজ যে বাড়ির ঠাকুর দালানে বসে এই কাহিনী শুনছি সেটাই হল এই বড়বাড়ি। এই বাড়ির চেহারা অবশ্য প্রথম থেকেই এমন ছিল না। শুরুতে হয়ত মাটিরই ছিল, তারপর বংশানুক্রমে তৈরী হতে হতে আড়েবহরে বেড়ে আজকের চেহারা পেয়েছে। এই দুর্গাদালান সংলগ্ন মন্দিরেই শালগ্রাম শিলা শ্রীশ্রী অনন্তদেব নিত্য পুজিত হন।  

Durgapujo of Banerjee House Borobari Makardaha Howrah
The sacred stone representing Narayan or lord Vishnu Salgram Shila,  Anantadeb
আগেই বলেছি রামকানাই কুলদেবতাকে নিয়ে বড়বাড়িতে চলে আসার পরও আদিভিটে মনসাতলাতে পরিবারের অন্য তরফের বংশধররা বসবাস করতেন। কালক্রমে বাচস্পতি মহাশয়ের হাতে লাগানো সেই গাছ ডালপালা মেলে বিশাল আকৃতি নিয়েছিল। সেই থেকেই এর নাম মনসাতলা। একসময় সেখানে বেদীও করা ছিল। পরে সংস্কার সত্বেও বেদীটি ভেঙ্গে যায় এবং মূল গাছটিকেও কেটে ফেলতে হয়। মূল গাছের একটা অংশ ১৯৭০ - ৭২ সন নাগাদ আবার লাগানো হয় এবং সেটি এখনও বর্তমানে যে বাড়ি তার মধ্যেই রয়েছে।

Manasa tree at manasatala Banerjee house Makardaha Howrah
The remnants of the original Manasa Tree at Manasatala Banerjee family.

পরিবার বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যানার্জী গোষ্ঠী এই এলাকায় আরো ছড়িয়ে পড়তে থাকেন। রামকৃষ্ণের অনান্য উত্তরসুরীরা, যেমন রামকৃষ্ণের তৃতীয় পুত্র রামলক্ষণ এবং তাঁর কনিষ্ঠ সহোদররা বড়বাড়ি ছেড়ে এর উত্তর-পূর্ব দিকে আলাদা বাড়ি বানিয়ে থাকতে শুরু করেন। পরে এই এলাকার নাম হয় 'নতুন বাড়ি'। 

Natun Bari Banerjee family Durgapujo Makardaha Howrah.
The Natunbari of Banerjee Family

বর্তমানে ব্যানার্জী পরিবার "বড়বাড়ি", "মনসাতলা" এবং "নতুনবাড়ি" এই তিনটি এলাকা নিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন। আর পুরো এলাকাটা ব্যানার্জী পাড়া হিসেবেই পরিচিত। তবে এই বড়বাড়িই হল ব্যানার্জী পরিবারের ভরকেন্দ্র। বিত্ত বৈভবে বড় ছেলে রামকানাইয়ের পরিবারের এই শাখাটিই উল্লেখযোগ্য। ব্যানার্জী পরিবার ছাড়াও এই অঞ্চলে তাঁদের কারুর কারুর মাতুল / দৌহিত্র বংশও এই গ্রামে বসতি করেন। এর মূল কারণ ছিল যে পরিবারের কারুর মৃত্যুর পর অশৌচ লাগলে শাস্ত্রমতে অনন্তদেবের নিত্যপুজার ব্যাঘাত ঘটবে। এমতবস্থায় দৌহিত্র বংশের কেউ নিত্যপুজার ভার নিতে পারেন। সেই কারণেই এঁদের এখানে আসা। ব্যানার্জী গোষ্ঠী ছাড়াও গ্রামে মুখোপাধ্যায়, চট্টোপাধ্যায়, গঙ্গোপাধ্যায় ইত্যাদি পদবীধারীদেরও বসবাস আছে। এখানে আরো উল্লেখ করা যেতে পারে যে এনাদের আদিনিবাস বাগান্দা গ্রামে ব্যানার্জী বংশের একটি শাখা আজও রয়ে গেছে। যদিও আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বাগান্দার ব্যানার্জী বংশের সঙ্গে মাকড়দহের ব্যানার্জী বংশের যোগাযোগ খুঁজে বের করা নিতান্তই দুঃসাধ্য। বাগান্দার বংশে বহু কৃতী মানুষ ছিলেন এবং তার মধ্যে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য উমেশ চন্দ্র ব্যানার্জী, (Womesh Chunder Bonnerjee) যিনি ছিলেন বিখ্যাত ব্যারিস্টার এবং ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তথা প্রথম প্রেসিডেন্ট। 

অনন্তদেব শিলার নিত্যপুজা বড়বাড়িতে হলেও, সব তরফের জন্যই তিনি গৃহদেবতা। সুতরাং পরিবারের যে কোন শরিকের বাড়ির শুভ কাজ, বিবাহ, উপনয়ন বা অন্নপ্রাশনে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়।

রামকানাইয়ের পুত্র শিব নারায়ণ বড়বাড়ির সামনে একটি আটচালা শিবমন্দির নির্মাণ করেন যার প্রতিষ্ঠা হয় ১২৩৬ বঙ্গাব্দের ২৬শে চৈত্র। সৌমেনবাবুর মুখেই শুনলাম মন্দিরের শিবলিঙ্গ আনা হয়েছিল কাশী থেকে নৌকাযোগে। গঙ্গা দিয়ে আসার পর সরস্বতী নদী ধরে এই লিঙ্গ আনা হয়েছিল মাকড়দহের ঘাট পর্যন্ত। 

Shiv Mandir in front of Barobari of Banerjee Family
Shiv mandir opposite Barobari
এর আগেই আরেকটি শিবমন্দির স্থাপন হয়েছিল মনসাবেদীর কাছেই। এটি তৈরী করিয়েছিলেন রামকৃষ্ণের দ্বিতীয় পুত্র দুর্গারাম, ১২০১ বঙ্গাব্দে।

Shiv temple opposite manasatala Banerjee house Makardaha Howrah
Shiv Temple at Manasatala Banerjee house
এছাড়াও গ্রামের উন্নতিতে ব্যানার্জী পরিবারের বেশ কিছু অবদান ছিল। সে সময় পরিশ্রুত পানীয় জলের বিরাট সমস্যা ছিল। মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল পুকুর বা দীঘি। চেষ্টা করা হত পানীয়জলের পুকুর আলাদা করে রেখে জল পরিশ্রুত রাখার। সেসময় অর্থবান মানুষ বা জমিদাররা জলের জন্য পুকুর কাটাতেন। ব্যানার্জী পরিবারের উদ্যোগে এলাকায় দুটি পানীয় জলের পুকুর কাটানো হয়। এর একটি বড়বাড়ির সামনে আর একটি মনসাতলার পাশে। পানীয় জলের জন্য ব্যবহার না হলেও দুটি পুকুর আজও গ্রামের মানুষের কাজে লাগছে। 
Bonedi durgapujo of Banerjee family Tarobari Makardaha Howrah
Tarpan being performed on the occasion of end of pitripaksha at the pond in front of Barobari

Bonedi durgapujo of Banerjee house Makardaha Howrah.
A small podium for deities at the pond near Barobari of Banerjee Family


ইতিহাস ছেড়ে এবার ফিরি দুর্গাপুজায়। ব্যানার্জী পরিবারের তিনটি শাখাতেই আলাদা আলাদা দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। তার মধ্যে পুরোনো ঠাকুরদালানে হয়ে আসা বড়বাড়ির সবচেয়ে প্রাচীন পুজোটাই দেখার মত। এখন পরিবারের অনেকেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন দেশের বিভিন্ন জায়গায়, অথবা বিদেশেও। কিন্তু পুজোর সময় সবাই এসে জমায়েত হন বড়বাড়িতে। বাড়ির ছোট থেকে বড় সবাই মিলে পুজোর পরিকল্পনায় অংশ নেন বেশ কিছুদিন আগে থেকেই। দুর্গাদালানে আড্ডা থেকে আলোচনা সবই জমে ওঠে। পুজো হয় গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে। পুজোর নিয়মাবলি বহুকাল আগে থেকেই বিশদে লিপিবদ্ধ করা আছে৷ আজও তার নড়চড় হয় না। সৌমেনবাবু একটা খাতা দেখালেন যাতে পুজোর পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুদেশ হাতে লেখা আছে, সেই মতোই পুজা করা হয়।
Bonedi Barir Pujo Banerjee House Makardaha Howrah
The handwritten book containing the puja rituals

অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দেবীর আবাহন করে আলাদা আলাদা ভাবে প্রতিমা, আভরণ, সজ্জা, অস্ত্র সব কিছুতেই নৈবিদ্য অর্পণ করা হয়। মাকে সপ্তমীতে ১৭ টি, অষ্টমীতে ২২টি এবং নবমীতে ২০ টি নৈবিদ্য দেওয়া হয়। আগে পুজোয় বলি হত, সাতআট বছর হল সেটা বন্ধ হয়েছে। এখন আখ, চালকুমড়ো ইত্যাদি বলি দেওয়া হয়। প্রত্যেকদিন পুজায় নিবেদন করা হয় পঞ্চব্যাঞ্জন। ভোগে মাছও নিবেদন করা হয়। নবমীর দিন খিচুড়ি ভোগ আর সেদিন সবার জন্যই অবারিত দ্বার। আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে, গ্রামের মানুষ, অনাহুত, রবাহুত নির্বিশেষে সকলকে বসিয়ে পাত পেড়ে  খাওয়ানো হয়। পুজোর কটা দিন পরিবারের সকলে মিলে দুর্গাদালানের সামনে একত্রে খাওয়াদাওয়া করেন।

The kids of Banerjee family Barobari Makardaha Howrah
The kids of Banerjee family in front of Durga Dalan of Barobari

বিসর্জন দেওয়া হয় বাড়ির সামনের পুকুরে। পুজোর কদিন মা হয়ে ওঠেন পরিবারেরই একজন, বাড়ির মেয়ে। তাই বিসর্জনের বেলায় পরিবারের কারোরই চোখের জল্ বাঁধ মানে না। ছলছল চোখে বিদায় জানাবার পর চোখের জল মুছে বিজয়ার আনন্দে মেতে ওঠেন সবাই। শুরু হয় পরের বছরের জন্য প্রতীক্ষা। 

বাড়িতে কিছুক্ষণ বসে গ্রামটা ঘুরে দেখতে বেরোলাম। সঙ্গী হলেন পরিবারেই একজন। বাড়ির সামনে শিবমন্দিরের লিঙ্গ দর্শন করে গেলাম সামনের পুকুরে। মহালয়ার সকালে তখন সেখানে কিছু মানুষ তর্পণ করছেন। এর পরের গন্তব্য আদি ভিটে মনসাতলা। আসল মনসা গাছটি নষ্ট হয়ে গেলেও তারই একটি শাখা বাড়ির মধ্যে এখনো রয়েছে। এর পাশেই নতুন তৈরী দুর্গাদালানে প্রতিমা তৈরী হচ্ছে।

Durgapujo at Manasatala Banerjee Bonedi House Makardaha Howrah
The Durga idol at Manasatala Banerjeebari

এখান থেকে হাঁটা পথে কিছু দুরেই 'নতুন বাড়ি'। নামে নতুন বাড়ি হলেও এবাড়ির বয়স একশ বছরের উপর, গায়ে প্রাচীনত্বের ছাপ। এবাড়িতে দুর্গাদালান নেই। রাস্তার ধারে নতুন তৈরী  দুর্গাদালানে পুজোর আয়োজন।

Bonedi pujo at Natun Bari of  Banerjee Family
The Durga idol of Natunbari Banerjee Family

এখানে দেখা হল নতুন বাড়ির পরিবারের দুই প্রৌঢ় সদস্যের সঙ্গে। আলাপ করাতে খুব খুশি হলেন। এঁদের মধ্যে একজন ময়দানের স্বনামধন্য ফুটবলার ছিলেন।

Bonedi pujo of Banerjee Boro Bari Makardah Howrah
Two senior members of Natunbari Banerjee House

সব শেষে এবার ফেরার পালা। মহালয়ার সকালে আকাশের মুখ ভারী। মেঘ করে আছে, যে কোন সময় বৃষ্টি নামল বলে। যাবার বেলায় সেই বিষণ্ণতা কিছুটা আমাদেরও ছুঁয়ে গেল। বাড়ির সকলে মিলে অনুরোধ করলেন পুজোর কোন একটা দিনে যদি আসতে পারি। আসার ইচ্ছে অবশ্যই রইল। ভারী সুন্দর লাগলো এনাদের আতিথেয়তা। যেটা সবচেয়ে ভালো ব্যাপার আজকের দিনেও পরিবারের সব সদস্যদের মধ্যে এই আত্মিক বন্ধন। কুলদেবতা অনন্তদেব আর মা দুর্গার কৃপাতেই এই বিরাট পরিবার আজও একসুতোয় গাঁথা রয়েছে। 

কৃতজ্ঞতা স্বীকার... 
অমিতাভ গুপ্ত 
বড়বাড়ির ব্যানার্জী পরিবারের সকল সদস্য, বিশেষ করে সৌমেন এবং পুজা ব্যানার্জী।

Sunday, April 14, 2019

History Heritage and Temples of Joynagar




The-Temples-Of-Joynagar-Majilpur


Joynagar is just another small hamlet like a million others, tucked away somewhere in the depths of the District of South 24 Parganas in West Bengal. But there is a difference, Joynagar is almost a household name, not only in Bengal but outside too and the reason of course is finest quality of Moa or Moya that is produced here. It is not the sole example though where a place is known by the food it produces and for Bengal it had been no exception. The interesting part is more than anything else most of such places have been associated with some kind of sweets that is produced locally and I am not surprised when the WB Tourism department decided to use the tagline “The sweetest part of India”. The list is quite long, Sitabhog and Mihidana  from Burdwan, Lyancha at Shaktigarh, Pantua at Ranaghat, Sarpuria and Sarbhaja from Krishnanagar, Lal Doi from Nabadwip, Monohara at Janai, Babarsha at Khirpai, Mecha Sandesh of Beliatore, Makha Sandesh of Guptipara, Lal Doi of Nabadwip, the unique Jhuri Doi a
nd Chanabara from Baharampur, the list is long and elaborate and I haven’t even added all.

So what’s so unique about Joynagarer Moa?

The_Moa_and_Temples_Of_Joynagar_Majilpur

Joynagar of-course is all about Moa, and in fact both words are uttered in same breath. It's not just Moa but “Joynagarer Moa” as said in Bengali and come winter thousands of sweet shops in Kolkata and districts start flaunting “Joynagarer Moa” available on sign boards and flexes. Interestingly most of these Moa on sale are not even from Joynagar, but made somewhere else, often locally. But you can’t really sell Moa without calling it “Joynagarer Moa” and that’s the order of the day.

This precisely  is the reason I prefer to buy Moa from Joynagar only.  The authenticity part is taken care of and that also gave me a chance to be a witness to the elaborate process that goes on behind for making the finest Moa. Making good quality Moa requires lot of skill and experience and the people who make are truly artisans per excellence. But then this could be replicated anywhere else. Then what’s so special about Joynagar? That’s the question that first came to my mind a couple of years back when I had started expanding my interest beyond savoring the Moa and dug  into the fascinating process that goes into making it. The primary components are "Khoi" (puffed rice) “Nolen Gur” or the date palm jaggery, the edible liquid gold which are napped into Ghee (clarified butter). Then Khowa Kheer, dry grapes, pistachio crumbs, cardamom and cashew nuts are added as taste enhancer and garnishing. The secret lies in the milky white Khoi, which comes from only a breed of paddy called “Kanakchur” which is extensively cultivated around Joynagar block and surrounding areas and not anywhere else in Bengal or outside. This is what makes Moa unique to Joynagar and Moa has also earned the Geographical Indication (GI) tag. The notification covers the Block I and II of Joynagar Majilpur Municipal area.

Anyways I will not delve much into the technicalities as that is not the purpose of this post. I had documented my findings and experience in my blogpost in full details and anybody interested can check this out from the link below. 

Story about Joynagar Moa and Nolen Gur

Come winter and I have made it a ritual for myself to make a trip to Joynagar to pick up Moa and some fine Nolen Gur. This year was no exception and I made the season’s first visit as the chill set in. This year I wanted to make this a short riding trip and in addition to Moa and Gur I intended to find out what else Joynagar has on offer and I must say I wasn’t disappointed. Though the Moa had taken the center stage and overshadowed everything else, still Joynagar can garner interest in anyone’s mind with it’s history, culture and temples.

This time I decided to leave the Dominar behind. I had to carry back a lot of precious load which the motorcycle was not suitable for. So it was my trusted Honda Activa 125 , that was chosen for the job. Scooters are made to run errands and handle daily chores rather than touring but they can be a perfect companion even on a longish trip. A scooter wouldn’t travel fast thereby automatically allowing me to enjoy the surroundings and soak in the scenery without taking away too much concentration for the ride alone.

So on a fine chilly morning, I set off from home, with the small 5.3 liter tank filled to the brim. Joynagar was approximately 65kms away from my home hence the round trip could easily be done without the need to refill. From my New Town home I took the EM Bypass and went all through the length of the road terminating past Garia at the flyover which leads to the newly built bypass leading to Baruipur. This is beautiful road with the up and down corridor running parallel to both sides of the banks of a canal which acts as divider. There is still lot of greenery and tree cover around but the fast paced construction of huge housing projects on both sides of the road shall ensure that the road will lose it’s charm is near future.  Thankfully now it was devoid of much traffic and joy to ride on. The surfacing is good enough as not to pose any problem for the Activa

The_Temples_and_Moa_Of_Joynagar_Majilpur

The Honda Activa 125 en route to Joynagar

Where the dual corridor ends, a left turn would take me right into the heart of busy Baruipur town, teeming with thick traffic of buses, auto rickshaws, Totos(battery powered rickshaws), trucks and a trillion people milling around. Thankfully I had to endure this for a short stretch of about a kilometer and the automatic transmission of the scooter was simply a blessing here and navigating through catastrophic traffic felt like cakewalk. After this few minutes of madness a right turn took me to the newly constructed flyover across the railway tracks which gave a much sought after relief from the massive traffic snarl which used to be a constant at the railway level crossing. After the flyover traffic thinned out, excepting a mild congestion at the crossing where I had to again turn right towards Joynagar. The road going straight leads to Canning and then onward to Sundarbans.

I took the turn and then in few minutes later I was riding into the countryside. The single lane road, at places was quite busy with buses, trucks and autorickshaws. The road would occasionally pass by congested marketplaces, but going was good. The engine of the Activa pulling effortlessly and I was easily keeping up with the rest of the traffic. The traction from the automatic transmission was strong and linear, as if being pulled by an electric motor. Quick overtaking of the slow moving engine vans and autorickshaws were done with ease and the nimble handling of the scooter helped. I was thoroughly enjoying the ride. Though there were some rough patches, but the Activa took everything in it’s stride and marched on. Places with sweet sounding names like Krishnamohon, Gocharon, Padmer hat, Dakshin Barasat, passed by. Finally I was at Bohoru, just few kilometers ahead of Joynagar. This is where the land of Moa starts. Interestingly Bohoru is also famous for it’s Moa though the magnitude of popularity is far less when compared to Joynagar. However the locals are proud of their Moa which they claim to be distinctly different in flavor and taste from Joynagar. In fact earlier I noticed a strong undercurrent towards battle of supremacy between the two places, each claiming their’s are the best. Well I have tasted both, from the best of the shops where they offered Moa of highest quality to me. All I can say both are equally good with Joynagar’s moa bearing a comparatively subtle taste. Maybe I am biased that wee bit towards Joynagar. People  may disagree as this is something strongly personal.

The hordes of shops on both sides of roads started showing up as I entered Bohoru. Colorful flexes in bright yellow and red screamed of best quality "Bohorur Moa" and gur. Interestingly most of the shops are temporary. There are shops which were originally selling hardware, stationery items etc. Some are makeshift ones, but come winter everything turns into a Moa shop to cash in on the frenzy. Moa is cottage industry here, made at many homes, so there is no dearth of supply but the quality is often questionable. So it is better to stick to the old sweet shops who have been making good Moa since ages. One of my favorite is Shyamsundar Mishtanna Bhadar which is a good option for buying the famous Bohoru Moa.

The_Temples_and_Moa_Of_Joynagar_Majilpur

However this time picking up Moa from Bohoru wasn’t on my cards. I would have passed by, but I stopped to see the imposing structure of Bohoru High School right on the road. It is a rather staid building, devoid of any architectural charm. Just that it is a huge boxy building, painted in bright white color with blue stripes as is the norm in Bengal these days. However the Bas-Relief concrete lettering on the main gate announce the name of the school and year of establishment which is 1856, which means a year before Sepoy Mutiny. This locality existed back then and for a moment I tried to shut my eyes and think how this very place would have looked like in those times . I am sure this was also part of the Sundarban biosphere back then as the mangrove forest had retracted since human habitation expanded and engulfed a sizable part of the forest. The school could have been a single room back then, may be just a mud house, who knows. Looking at the huge building brimming with students this seemed so unreal.

Bohoru_Highschool

The different blocks of the building are dedicated and named after famous people like Dr. Nilratan Sarkar, Poet Shakti Chattopadhyay and singer Hemanto Mukherjee, or Hemant Kumar as he was known in Bollywood, whose ancestral home was here.

Bohoru_Highschool

Then I rode the short distance to Joynagar. From here onwards, the road is congested as it passes through crowded marketplace. I had to carefully negotiate the Activa through a tangle of motorized vans, auto-rickshaws and occasional trucks. I rode upto Joynagar railway station where my day’s destination was.

Shrikrisha Mistanna Bhandar is located right on the T junction where the road connecting the Joynagar railway station meets the main road I was travelling on. This was marked as SH 1. The shop is quite prominent and location is such you can’t miss it. I squeezed the scooter in the narrow space between the shop and the shoulder of the road, which is another virtue of being a scooter. Parking a car is simply out of question here.  I couldn't have parked my Dominar the way I parked the Activa. 

Shrikrishna_Mishtanna_Bhandar_Joynagar_Moa

This is one of the oldest shop in Joynagar started by two friends Purna Chandra Ghosh and Nitya Gopal Sarkar back in the year1929. To the locals, this is also known as “Bunchki Babur dokan” as Nitya Gopal was known more by his pet name Bunchki. The shop is small non-descript and not received much upgrades and decor since it’s humble  beginning. It’s still a dingy old joint but churns out some amazing Moa and Nolen Gur.Now this is being managed by Ashok Ghosh, son of Purna Chandra Ghosh. This year the best quality Moa is retailing for Rs.350/-  a kilo and Nolen Gur at Rs.160/- a kilo. They also have a lesser variety of Moa at Rs.250/- per kilo but coming all the distance I wanted nothing but the best. I placed my order then went out to explore the place, something which I didn’t do before.

Shrikrishna_Mishtanna_Bhandar_Joynagar_Moa

Moa at Shrikrishna Mishtanna Bhandar

Shrikrishna_Mishtanna_Bhandar_Joynagar_Moa_Nolen_Gur

The Nolen Gur at Srikrishna Mishtanna Bhardar is of excellent quality


Shrikrishna_Mishtanna_Bhandar_Joynagar_Moa_Nolen_Gur

Nolen Gur being packed at Shrikrishna Mishtanna Bhandar

Joynagar, like Bohoru is a very old settlement. Joynagar Institution is a huge school building painted in blue which also as founded in the year 1878, which means it is 140 years old. This school building is also on the main road.

Joynagar_Institution_school


Joynagar_Institution_school


I had also heard that Joynagar had few old temples. I decided to explore them next. The SH 1 cuts through the city. Coming from Kolkata the railway track will be on left and the main city extends on the right side. There are large water bodies on both sides of the road often obscured by the row of buildings and shops. Through gaps I could see the water body and forms of some temples on the opposite side. At one place there is a ghat. I stopped the scooter and went down. As I stepped down the ghat, the row of white temples were clearly visible on the other side with their reflection on the water. I came up and then rode through a narrow lane running from state highway into the main locality. I asked around the locals and was told that there are two temples which should interest me. The first one was the Joychandi Temple, which is apparently an incarnation of Goddess Durga. It is said that the name Joynagar was derived from Devi Joychandi. The second one was the 12 Shiva Temples.

The_Temples_Of_Joynagar_Majilpur


Both the temples were close by and I asked my way around from the locals. None of the temples are too far away from the road running parallel to the state highway. As I started riding, a pair of temples first caught my eyes. Both have been painted in white. One is in typical Atchala construction and the other looked like a ‘Dolmancha, set on a square base  with “Charchala Construction” on top with four arched gateways on four sides. Nobody could throw light on these temples as to how old they are or anything about their history. The Atchala temple has rather simple construction with no ornate front facade or walls.

The_Temples_Of_Joynagar_Majilpur

A short distance away at one corner I saw another small temple with domed top and entrance with three foiled cusped arch and double pillars on both sides. Somehow I felt that this has strong influence of Islamic architecture. This was a shiva temple and it is evident that regular worshiping is conducted here. Again I could not find anybody who could tell me the details of this small but rather unique temple.

The_Temples_Of_Joynagar_Majilpur

Moving on, just a short distance away I asked the locals again and entered a narrow lane on my left which led to the Joychandi Temple. Situated on a large ground, this is a “Dalan” type architecture and entrance with three arches and square pillars. An expansive, fully shaded and cemented pavilion or ‘Natmandir’ adorns the front of the temple for the devotees to gather. The idol is small, standing on a lotus seat with two hands visible. The left hand is in ‘Barabhoy’ mudra. Agains there was nobody, not even a priest whom I could ask for the details and the history of the temple.

The_Joychandi_Temple_Joynagar_Majilpur

Pavilion in front of Joychandi Temple

The_Joychnadi_Deity_at_Joychandi_Temple

The Joychnadi Deity at_Joychandi Temple Joynagar






Moving on I again rode out on the main road which led straight to the 12 Shiva temples. Beautifully located with large water bodies in front, the temples are quite impressive. The positioning of the water-bodies indicate that at one point of time a river flowed here. Long back the river chaged course leaving its trace only in the form of elongated and separated water-bodies in a line. I am not sure if it was Ganges or one of it’s tributaries but existence of a river is easily identifiable.

TWELVE_SHIVA_TEMPLES_HISTORY_OF_JOYNAGAR


All the temples are Atchala constructions barring one which was constructed in Pancharatna Style. The front fascia for all temples are beautiful with elaborate arched entrances where twin pillars are adorning both sides of the door. There isn’t much of terracora work found on any of the temples. The temples are all painted in bright white and in stark contrast there is a twin pillared doorway in between the 12 temples, painted in bright red. The road passing through went into the neighborhood inside. In addition to the 12 temples there is a large Dolmancha on one side. The marble plaque read that this was built by Ramkanai Basu in the Bengali year of 1205.which means the Dolmancha is about 220 years old.

DOLMANCHA_JOYNAGAR_TWELVE_SHIVA_TEMPLES

TWELVE_SHIVA_TEMPLES_JOYNAGAR


From the look of it, I think these temples were painted in white in recent times. I am not sure if terracotta panels existed on these temples but even if they were now its all gone. The typical look of brick and terracotta temple is missing but what remains is still interesting.

Legend has it that in 1600 AD when King Pratapaditya Roy of Jessore, the last independent Hindu king of Bengal, lost battle against the Mughals, his dewans, and priests fled to avoid possible death or conversion. They came to this place with the deity of Radha Krishna and settled down. A Brahmin named Shree Krishna Udgata settled here at a place known today as ‘Bhattacharjee Para’. The present residents, the Bhattachariyas, are all his scions. Currently the temple complex is maintained by "Mitraganga Trust" as evidenced from the plaques. They also maintain the ghats along the water bodies.


TWELVE_SHIVA_TEMPLES_JOYNAGAR

This was enriching experience barring the fact that I could learn almost nothing about the rich history of the place and the temples. May be I will have to search for appropriate books and references and try to unearth the details.

I rode back to the shop, collected the full load of Moa and Nolen gur, settled the bill and started my return journey by the same route. Somewhere near Gocharon, on my left  I saw a narrow road leading inside a foresty patch. It was a beautiful afternoon and the road seemed worth exploring. So I went in. After about 100 meters the condition worsened and it almost turned into a dirt track. The Activa handled that bit of off-roading and trundled on. The scenery was beautiful around me. On both sides of the trail I could see fields full with blooming cauliflowers. Tall betel nut trees lined the borders of the field, their leaves shining under the golden afternoon sun. It was almost surreal inside. Further down I noticed a mango grove, with leafy branches spread out wide and rays of sunlight casting patterns of light and shadow on the grassy ground. It was so calm inside, almost devoid of any noise. I parked the scooter, settled on a branch and lit a cigarette. These are the precious moments of life, a perfectly earned “me time” on a road-trip.

TEMPLES_HISTORY_JOYNAGAR


TEMPLES_HISTORY_JOYNAGAR

TEMPLES_HISTORY_JOYNAGAR


Few minutes later I started back. Further down, while I was riding on the extended EM Bypass I had stopped by at a small restaurant as I was longing for a hot cup of tea. Restaurant would be an exaggeration to describe the place. It is a rustic joint with a nice touch. The location was nice. This was on a deserted stretch of road. The shop had an open area in front with shade where the seating arrangements are made. This looked just the place where you feel like taking a short break, strecting your legs during a drive / ride and have a quick adda session over tea and snacks. The tables are actually the wooden rollers used to store cables, nice touch again. The two brothers running the shop are nice people and ready to strike up a conversation with anybody walking in. Before tea I ordered Maggi which was made with eggs and tasted good. They also sell meal on thali system, both of veg and non-veg variety and it appeared that most of his customers are the medical representatives and travelling salesmen. Must say I need to come back some day for the rice thali. The ambiance and the nice company of the two brothers are good enough reasons for a repeat visit.


It was an uneventful journey back home battling the usual late evening traffic on EM By-pass. When the pulled the scooter up the stand at home, the odo read 132KMs. A nice short day tour and I loved the way the scooter behaved all through. So more such scooter trips on the cards for me in coming days.