Sunday, August 14, 2016

PICE HOTELS OF KOLKATA - JAGANNATH BHOJONALOY (জগন্নাথ ভোজনালয়)


আজ ছিলো 'জগার' দিন.....

জগাটা আবার কে? আহা জগা হলো গিয়ে আদরের ডাক নাম.... জগার গুনমুগ্ধরা তাঁকে আদর করে এই নামেই ডেকে থাকেন ....

একটা ভালো নাম তো আছেই,... জগন্নাথ,....পুরো বললে 'জগন্নাথ ভোজনালয়'..... হ্যা ঠিক ধরেছেন,....এই জগন্নাথকে পাবার জন্য পুরীধাম দৌড়োনোর প্রয়োজন নেই, এটি ঘরের কাছেই, কলকাতার একটি বিশিষ্ট পাইস হোটেল। বিগত প্রায় ষাট বছরের ওপর ভোজনবিলাসী জনগণেশের সেবায় নিয়োজিত।

এনার অধিষ্ঠান এস এন ব্যানার্জী রোডে, টাইমস অফ ইন্ডিয়া অফিসের ঠিক পাশে।


তা আজ গিয়েছিলাম,...জগন্নাথ দর্শন করে এবং বলাই বাহুল্য পেটপুজো দিয়ে মনে যারপরনাই আনন্দ নিয়ে ফিরেছি।
এখানে মাছের পদগুলি অতি উৎকৃষ্ট এবং মৎস্যরসিকরা এখানে এলে অভিভূত হবেন। আজ টেবিলে বসে তলব করলাম পার্শে এবং বোয়াল মাছ,... আড়ে দীঘে বেশ বড় পার্শে মাছ এবং মানানসই আকারের বোয়াল মাছ পাতে পড়ল। মুখে দিয়েই বোঝা গেলো অত্যন্ত সুস্বাদু এবং ফ্রেশ মাছ। এই সিদ্ধান্তে পৌঁছোন যেতেই পারে যে আধিকারিকরা গুণমান নিয়ে আপোষ করেন না।


এছাড়াও নিয়েছিলাম এদের একটি বিশেষ পদ যার নাম দেওয়া হয়েছে "রুই মাছের কবিরাজী ঝোল"। সাধারনতঃ মাছের কবিরাজী শুনলেই মনের মধ্যে ভেসে ওঠে তেলে ভাজা ঝুরি ঝুরি ডিমের খোলসে একটি সুপুষ্ট মাছের টুকরো যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে মিত্র কাফে, দিলখুশা, বসন্ত কেবিন বা আপনজনের মতো বাঘা বাঘা নাম। এই বস্তুটি কিন্তু তার ধার কাছ দিয়েও হাঁটে না। এটি হলো ফুলকপি, আলু, কাঁচকলা এবং পেঁপে দিয়ে বানানো রুই মাছের পাতলা ঝোল। গুরুপাক খেয়ে খেয়ে আপনার পেটের অবস্থা যদি পটলডাঙ্গার প্যালারামের মতো হয় তাহলে আপনার জন্য এই পদটি আদর্শ। পটল দিয়ে সিঙ্গি মাছের ঝোলের তুলনায় এর গুন কিন্তু কোনো অংশে কম নয়। নামের উৎস কি তা নিয়ে বিতর্ক চলতেই পারে, আমি জিগ্যেস করার সুযোগও পাইনি, কিন্তু আমার নিজের ধারণা, আগেকার দিনে অম্লশুলের রুগীদের জন্য বোধহয় কবিরাজরা এই রকম ঝোল খাবার নিদান দিতেন। তার থেকেই বোধহয় এই নামটা দেওয়া।

পাঁঠার মাংসটা আমার খুব একটা সুবিধার লাগলো না। ঝোলটার স্বাদ ভালো হলেও মাংসের টুকরো গুলো সুসিদ্ধ ছিল না ফলে খেতে যথেষ্ট অসুবিধা হয়েছিল। জগার ঠেকে মাছেরই জয়জয়াকার, মাংশাসীরা অতটা খুশী হতে পারবেন না।

আর একটা ছোটো দুঃখ থেকে গিয়েছিল,....তা হলো মেনুতে চাটনী এবং পাঁপরের কোনো স্থান নেই।

খাবারের দাম অত্যন্ত পকেট সহায়ক, অল্প পয়সাতে পেটচুক্তি খাওয়া। নিরামিষ থালি পাওয়া যায় তিরিশ টাকাতে,.... মেনু বোর্ডে পরিস্কার লেখা আছে জগন্নাথ ভোজনালয় তিরিশ টাকার নিচে আপনাকে খাওয়াতে অপারগ। সুতরাং ঢুকতে হলে আপনাকে নুন্যতম তিরিশ টাকা পকেটে রাখতেই হবে।

ওই এলাকাতে দুপুরবেলাতে গেলে ছোট করে একবার ঢু মারতেই পারেন। তবে এই অধমের একটা ছোট্ট উপদেশ হলো যেতে হলে একটু আগে আগে পৌছনই ভালো, তা ধরুন বেলা একটার মধ্যে হলে সবচেয়ে ভালো হয়। নইলে ভিড় বাড়ে। ওই যে একটা শ্যামা সঙ্গীত আছে না.

"আমায় একটু জায়গা দাও মায়ের মন্দিরে বসি,
আমি অনাহুত একজন অনেক দোষে দোষী।"

দেরী করলে আপনার অবস্থা ওই রকম হওয়া বিচিত্র নয়..

অতএব পা চালিয়ে,.......

ঠিকানাঃ
১০৫/৮, সুরেন্দ্র নাথ ব্যানার্জী রোড
কোলকাতা – ৭০০ ০১৪
টাইমস অফ ইন্ডিয়া অফিসের ঠিক পাশে।


No comments:

Post a Comment