THE HISTORY OF GARH-PANCHKOT:
The Pancharatna Terracota Temple at Garhpanchkot |
Garh-PanchKot is a beautiful weekend destination merely 250 kms away from Kolkata. Nestled on the border of Purulia district of West Bengal, the Panchet hill stands 1600 feet high and covered in dense forest with an amazing variety of flora & fauna. Set at the foothills is an ancient brick temple beautifully done in “Pancharatna” (five pinnacles) style architecture with terracotta works on the walls. The temple was in a dilapidated state some time back and on the verge of collapse but now restoration work had been done on it. Sadly most of the intricate terracotta panels are now lost.
Around this main temple there are few other structures like ruins of
another temple in Jor-Bangla style of architecture, ruins of what seems like an
ornate gate, a wall with pillars and arches which suggests the ruins of a
palace and adjacent to this a two storied ‘Shikhara’ styled structure which can
pass off as an ancient watchtower. Further to these if one climbs about 600
meters on the slopes of Panchet hill, the remains of a stone building
overlooking the plains below, which is assumed to be a guards quarter or garrison,
can be seen. This is locally known as ‘Garh’ or the ‘Fort’ and Panchkot
probably got the name prefix of ‘Garh” from this. This was the seat of a powerful kingdom which
reigned for more than 800 years around Panchet hill and adjacent Damodar basin,
beginning sometime in the year 850AD. It is said that original capital was
known as Tailakampa which is present day ‘Telkupi’ village on the southern bank
of river Damodar, situated some nine miles away from Panchet. Sadly after
Panchet dam was built whatever was remaining of this once great kingdom went
under water of the Panchet reservoir including a horde of beautiful stone and
brick temples built between 800AD and 1200AD. Today not much is known about the
Shikhara kings of Panchet who independently ruled a greater part of Purulia but
eventually lost their kingdom before British aggression during late 18th Century.
I had been to Garh-Panchakot and was smitten by the great natural beauty
which reincarnates itself during different seasons. The ruins amongst the
backdrop of the green hill looks almost surreal and it will transport you to a
distant past when this place was abuzz in its full glory. This time the rather
obscure history of Garh-Panchkot attracted me and I started digging into the
past trying to fish out facts from
different sources from internet, books and journals. But this proved to be
complex labyrinth of information which at times shrouded in dark, puzzling with myths and facts entwined and with multiple missing
links. It wasn’t an easy task for a layman like me to untangle a maze of
information and create a comprehendible string of events to describe the
beginning, rise and fall of the Panchet Kingdom. So I burnt some midnight oil
and finally could come up with a storyline (though not always kosher) that somehow
traces the history of Panchet kings from the days of ancient Tailakampa kingdom
or Telkupi, to present day.
Though debatable, the blood-line of the Panchet Kings continues even today
in the form of Raj Family of nearby Kashipur at Purulia.
Now let the story begin.
=====================================================================
নিশ্চুপ সবুজ
পাহাড়ের ঢালে এক অতিপ্রাচীন নিঃসঙ্গ পঞ্চরত্ন মন্দির। ইতস্তত ছড়ানো আরও কিছু স্থাপত্যের
ধ্বংসাবশেষ, কোনোটায় জোড়বাংলা মন্দিরের আদল, আবার আর এক দিকে সিংহ দরজার অবয়ব,
খিলেন আর আর্চ সম্বলিত প্রাচীন প্রাসাদের অবশেষ অনাদরে পড়ে আছে, পাশে দোতলা নজর
মিনার, গাছপালা বুনো ঝোপ দখল নিয়েছে গোটা জায়গাটার।ইতিহাস ঢাকা পড়েছে বিস্মৃতির
ধুসর চাদরে। সেই কোন সুদূর অতীতে এই অঞ্চলের ভুমিজ রাজারা মন্দির, দুর্গ আর মহল
দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন জঙ্গলে ঢাকা পাঞ্চেত
পাহাড়ের এই এলাকা। এককালে শত্রুর আক্রমণ ঠেকাতে গভীর পরিখা দিয়ে ঘেরা ছিল এই জায়গা,
নীচে নজর মিনার আর পাঞ্চেত পাহাড়ের কোলে প্রায় ছশ মিটার ওপরে গ্র্যানাইট পাথরে
তৈরী সৈনিকদের আবাস বা গ্যারিসন যেখান থেকে পাখির চোখে পুরো এলাকা নজরে রাখা যায়। গড়
পঞ্চকোট নামের মধ্যে ‘গড়’ অর্থাৎ দুর্গ তারই আভাস দিচ্ছে। নিচের ছবিগুলিতে এই গড় এর চেহারার কিছুটা আন্দাজ পাবেন।
যদিও সেরকম কোন জোরাল প্রামাণ্য তথ্য
নেই, হয়ত অনেকটাই গল্প কথা তবে এই গল্পের শুরু আজ থেকে প্রায় উনিশশো বছরেরও বেশি
আগে। এই রাজ্যের পত্তন হয় নাকি ৯০ খ্রীস্টাব্দের আশেপাশে, দামোদর শেখর নামে এক
ব্যাক্তির হাতে।কথিত আছে তিনি জাতে রাজপুত ছিলেন আর পুরুলিয়ারই ঝালদা এলাকার স্থানীয়
আদিবাসী সর্দারদের সাহায্যে পঞ্চকোট রাজত্বের সুচনা করেন। প্রচলিত গল্প কথা মেনে
নিলে পাঁচ আদিবাসী সর্দারের সাহায্যে গড়ে ওঠা থেকেই নাকি ‘পঞ্চ’ এবং ‘কোট’ বা খুঁট
যার অর্থ করলে দাঁড়ায় গোষ্ঠি, এই পঞ্চকোট নামের সূত্রপাত। আবার অনেকের মতে এখানের
আদি রাজা বাইরের কেউ নয়, বরং স্থানীয় ভূমিজ। পরে বৈবাহিক এবং অনান্য সূত্রে
অন্যান্য রাজপরিবারদের সঙ্গে এঁদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।পাঞ্চেত রাজ পরিবার অবশ্য
বরাবরই নিজেদের উত্তর পশ্চিম ভারতের রাজপুত বংশ বলে দাবী করে গেছেন কিন্তু ব্রিটিশ
ঐতিহাসিক কর্ণেল ডাল্টন আর ইম্পিরিয়াল গেজেটিয়ার অফ ইন্ডিয়ার লেখক বিখ্যাত স্কটিশ
ঐতিহাসিক উইলিয়াম উইলসন হান্টার এই দাবীর ব্যাপারে ঘোরতর সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন।তাঁদের
ধারণা ছিল পাঞ্চেত রাজাদের নিজেদের রাজপুত রক্তের দাবী নেহাতই হামবড়াই করে জাতে
ওঠার চেষ্টা, আসলে তাঁরা স্থানীয় মুন্ডা আদিবাসীদেরই অংশ।
A panoramic view of the Garh or the fort on top of Panchet Hill |
A closure view of the fort. This is completely made of large blocks of stone |
A temple like structure as part of the fort on Panchet hill.This could have been an entrance. |
Another pathway inside the fort. Passages like this were probably made to facilitate movement from one part to another |
The Pancharatna Temple.This is now restored by ASI |
দামোদর শেখরের
পরে পাঞ্চেত রাজ্যের ইতিহাস আবার অন্ধকারে ঢাকা।পর্দা সরিয়ে দেখতে গেলে একটু নজর
ঘোরাতে হবে পাঞ্চেত পাহাড় থেকে আনুমানিক ৯ মাইল দূরে দামোদর নদের দক্ষিণ পাড়ে
পুরুলিয়া ডিসট্রিক্টের তেলকুপীতে।বলা হয় এই তেলকুপীই আদতে প্রাচীন তৈলকম্পা
(Tailakampa) রাজ্য, এবং এখানে ক্ষমতাশালী শিখর বংশের রাজত্ব ছিল যাঁরা নাকি সেই
দামোদর শেখরেরই উত্তরসুরি এবং বর্তমান কাশীপুরের সিং দেও রাজ বংশের পুর্বসুরী। এই
রাজবংশের নামেই পাঞ্চেত অঞ্চলের অন্য নাম হয়েছিল শিখরভুম। এই তেলকুপীতেই শিখর
রাজবংশের পৃষ্ঠপোষকতায় ৯৫০ থেকে ১২০০ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে বহু মন্দির (ছোট বড়
মিলিয়ে অন্তত চল্লিশটি) গড়ে ওঠে যার বেশীর ভাগ ছিল ইঁটের আর বাকি পাঞ্চেত পাহাড়ের
আশপাশ থেকে আনা পাথরে তৈরী।মতান্তরে বলে এই মন্দিরগুলী রাজারা নয় বরং স্থানীয় বিত্তবান বণিক্ বা জৈন
ধর্মাবলম্বী মহাজনরাই তৈরী করিয়েছিলেন। রাজারাই হোক বা বণিকরা, এক সময় এটি অত্যন্ত
বর্ধিষ্ণু জনপদ ছিল সেব্যাপারে সন্দেহ নেই। অঞ্চলটিকে ঘিরে দামোদরের অববাহিকা জুড়ে
ব্যাবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছিল। দুঃখের বিষয় এই অসাধারণ মন্দিরগুলি যেগুলি ইতিহাসের
সাক্ষী হতে পারত তার প্রায় কিছুই আর আজ অবশিষ্ট নেই। দামোদরের ভাঙনে বহুকাল আগেই
অধিকাংশ মন্দির লোপাট হয়ে গিয়েছিল। ১৮৭২ থেকে ১৮৭৩ সালের মধ্যে কোন সময়ে
আর্মেনিয়ান ইঞ্জিনিয়ার এবং আর্কিওলজিস্ট জোসেফ ডেভিড বেগলার যিনি বিখ্যাত ঐতিহাসিক
আলেকজান্ডার কানিংহামের অধীনে ছিলেন, তিনি তেলকুপীতে পা রাখেন। সেই সময়ই বহু
প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ তাঁর নজরে এসেছিল এবং তিনি “Report of a Tour through the Bengal Provinces –
Telkupi” এ লিখে গিয়েছিলেন কেমন ভাবে ভাঙ্গনের দরুণ দামোদরের গর্ভে মন্দিরগুলি ক্রমশ
হারিয়ে যাচ্ছে। তিনি ওই সময় তেরটি অক্ষত মন্দিরের কথা লিখে গিয়েছিলেন। এরপর ১৯০৩
সালে এখানে আসেন আর্কিওলজিকাল সুপারভাইসর টি ব্লচ(T. Bloch)। তিনি এসে বেগলারের
লেখা ১৩ টি মন্দিরের মধ্যে দশটিকে অক্ষত দেখতে পান। খুব বিশদে না লিখলেও তাঁর
বর্ণনা থেকেই জানা যায় এই অঞ্চলে আগে প্রায় চল্লিশটি মন্দির ছিল। এই দশটি মন্দির
ছাড়া বাকিগুলো সবই অবহেলায় পড়ে নষ্ট হচ্ছিল। ব্লচ লিখেছেন বেঁচে থাকা দশটি
মন্দিরের মধ্যে দুটি মন্দির খুব পুরোন ছিল না এবং তখনও সেখানে কালী এবং ভৈরবের
পুজো হত।
এর পরের ইতিহাস
আরও করুণ। বেশীরভাগ মন্দিরই গেছে কালের গ্রাসে কিন্তু যেটুকুই বা বাকি ছিল, মানে
বেগলার এবং ব্লচ যা নথিভুক্ত করেছিলেন সেগুলিও আক্ষরিক অর্থেই ‘জলে গেছে’ মানুষের
অবিমৃষ্যকারিতায়।১৯৫৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর উদ্যোগে দামোদর
নদের উপর তৈরী হয় পাঞ্চেত বাঁধ এবং সেই বাঁধ সৃষ্ট জলাধার ডুবিয়ে দেয় একের পর এক
গ্রাম যার থেকে তেলকুপীও রেহাই পায় নি। যদিও এই কর্মকান্ডের কথা সেই বছরেই
আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার গোচরে আনা হয় কিন্তু সম্ভবতঃ সরকারী দীর্ঘসুত্রতা
আর লাল ফিতের ফাঁসে মন্দির বাঁচানোর কোন তাৎক্ষণিক উদ্যোগ তাঁরা নেন নি। এরপর
পশ্চিমবঙ্গ সরকার নড়ে বসে। কিন্তু ডিভিসি কে যখন অনুরোধ পাঠানো হয় যাতে তেলকুপী
যাতে ভেসে না যায় তা দেখার জন্য ততদিনে বড় দেরী হয়ে গেছে। সেইসময়ের এএসআই এর পুর্বাঞ্চলীয়
অধিকর্তা দেবলা মিত্রর কথায় ১৯৫৯ সালের জানুয়ারী মাস নাগাদ ডিভিসি পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে
জানায় যে তেলকুপী ইতিমধ্যেই জলের তলায়।
এরপর যথারীতি চোর
পালালে বুদ্ধি বাড়ে প্রবচন মেনে দৌড়দৌড়ি শুরু হয়। ১৯৫৯ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারী দেবলা
মিত্র অকুস্থলে পৌঁছে দেখেন সাতটি মন্দির জলের তলায় ডুবে গেছে, শুধু তাদের চুড়াগুলি
জলের উপর দেখা যাচ্ছে আর মাত্র দুটি মন্দির অক্ষত এবং তখনও জলে ডোবে নি। এরপর
কত্তাব্যাক্তিরা চিন্তাভাবনা শুরু করেন যদি কোন ভাবে জল সরিয়ে মন্দির বাঁচানো যায়
কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় নি এবং আমার ধারণা ডিভিসির মন্দির নিয়ে মাথা ঘামানোর
সময় এবং সদিচ্ছা কোনটাই ছিল না।
এরপর দেবলা মিত্র
একজন ফোটোগ্রাফার আর একজন সার্ভেয়ার নিয়ে ১৯৬০ সালের জুন মাসে আবার এখানে ফিরে
আসেন বাকি মন্দিরগুলি ডকুমেন্ট করে রাখার জন্য। জুন মাসে জল নেমে যাওয়ার জন্য
কিছুটা সুবিধে হয়েছিল। এইসময় দুটি মন্দির সম্পুর্ণ এবং একটি মন্দির চুড়া ভাঙ্গা
অবস্থায় পাওয়া যায়। বাকি সব মন্দিরগুলি, যেগুলি তাঁরা আগের বছর জলের তলায় যেতে
দেখেছিলেন সেগুলি প্রায় সম্পুর্ণ ধ্বংস হয়ে ইঁটপাথরের পাঁজায় পরিণত হয়েছিল। দেবলা
মিত্রর নিজের ভাষাতেই এই অক্ষত মন্দিরগুলি জরীপ করাও খুব সহজ কাজ ছিল না। জল অনেকটা নেমে
গেলেও দুটি মন্দির ছাড়া বাকিগুলোর কাছে পৌঁছনর জন্য দেশী নৌকা লেগেছিল। মন্দিরের
ভেতরে একহাঁটু কাদার মধ্যে নেমে ছবি তোলা আর জরীপ করা বেশ কঠিন এবং কষ্টদায়ক
ব্যাপার ছিল। আজকের দিনে তেলকুপীতে এই কটি মন্দিরেরই অবশিষ্টাংশ দেখা যায়।
মন্দির তো
বেশিরভাগই গেছে কিন্তু যাঁদের পৃষ্ঠপোষকতায় এগুলি তৈরী হয়েছিল সেই শিখর রাজবংশ
সম্বন্ধেও বিশেষ কিছুই জানা যায় না।চল্লিশটি মন্দির যাঁরা বানিয়েছিলেন সেই রাজবংশ
যথেষ্ট শক্তিশালী আর দীর্ঘস্থায়ী ছিল সেটা নির্দ্বিধায় বলা যায়। পশ্চিমবঙ্গে
এতগুলো মন্দির একসঙ্গে একমাত্র বিষ্ণুপুর ছাড়া আর কোথাও দেখা যায় না এবং বিষ্ণুপুরের ক্ষেত্রে একজায়গায় এতগুলো
এইরকম বৃহৎ আকার এবং বৈচিত্রের কারুকার্যমন্ডিত মন্দির গড়া সম্ভব হয়েছিল ক্ষমতাশালী
এবং অর্থনৈতিকভাবে বলীয়ান মল্ল রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায়। তেলকুপীতেও এর ব্যত্যয় হয়
নি। কিন্তু মল্লরাজাদের ইতিহাস এবং তাঁদের পুরাকীর্তি যতটা সুবিদিত, দুঃখের ব্যাপার
শিখর রাজবংশ এর সম্পুর্ণ বিপরীত। আমার নিজস্ব ধারণা হল এই পুরো অঞ্চলটাই জঙ্গল আর
পাহাড়ে ঢাকা থাকার জন্য দুর্গম এবং দুর্ভেদ্য ছিল। সমকালীন অন্যান্য রাজ্য গুলির
সঙ্গে বিশেষতঃ দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে রাজনৈতিক, ব্যাবসায়িক, বৈবাহিক মায় বৈরীতারও
বিশেষ কোন সম্পর্কই গড়ে ওঠে নি। বাইরের কোন পরিব্রাজকেরও পা পড়েনি এই অঞ্চলে।
পরবর্তীকালেও মুঘল সাম্রাজ্যই হোক বা বাংলার মুসলমান শাসকরা, সবাই এই অঞ্চলটিকে
এড়িয়েই চলেছেন। এই কারণেই এখানকার রাজত্ব এবং রাজবংশের ইতিহাস অনেকটাই আবছায়ায়। ঘটনাপ্রবাহ
বিচার করলে বোঝা যায় প্রায় আটশ বছর ধরে পাঞ্চেতের রাজারা প্রায় স্বাধীনভাবেই
রাজত্ব চালিয়ে গেছেন। যদিও আমি নিজের সীমিত পরিসরে খোঁজ করে খুব বেশী কিছু জানতে
পারি নি। তাও যেটুকু পেয়েছি বিভিন্ন সুত্র থেকে তার থেকেই আনুমানিক ৯৫০ শতাব্দী
থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত একটা ধারাবাহিক ইতিহাস নথিবদ্ধ করার চেষ্টা করেছি।
The ruins of the Jor BanglaTemple - Garjpanchkot |
The JorBangla Temple at Garh Panchkot - A Closure view |
এর পর একসময়
উড়িষ্যার রাজারাও এখানে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন।রাজা প্রথম এবং দ্বিতীয়
নরসিংহ দেবের সময় (১২০০ থেকে ১৩০০ খ্রীষ্টাব্দ) উড়িষ্যা শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং সেই
সময় থেকেই তাঁরা চেষ্টা করেছিলেন দক্ষিণ পশ্চিম বাংলার এই ভূমির দখলদারী নেওয়ার,
কিন্তু লাভ বিশেষ কিছু হয়নি।দুর্গম জঙ্গল আর পাথরে ঢাকা প্রকৃতির নিরাপত্তায় ঘেরা
অঞ্চলে এখানকার রাজারা নিজেদের মতোই রাজত্ব চালিয়ে গেছেন। উড়িষ্যার রাজারা কিছু
উপঢৌকন কর বাবদ পেয়েছেন অথবা বিপদের সময় সৈন্য সাহায্য। তবে উডিষ্যার প্রভাব যে
কিছুটা হলেও পড়েছিল তার কিছুটা প্রমান পাওয়া তেলকুপীর মন্দিরগুলির স্থাপত্যের
মধ্যেই। ওডিয়া রীতির জগমোহন,ওডিয়া শৈলীর সিংহমুর্তি(ঝাপ্পা সিংহ)তার প্রমান দেয়।
এছাড়াও তেলকুপীতে বহুকাল ধরে চলে আসা এক ধর্মীয় উৎসবের মধ্যেও উড়িষ্যা যোগের
স্পষ্ট ছাপ আছে। এটির নাম ‘দন্ড ছত্রপরব’। প্রতি বছর পয়লা বৈশাখে অনুষ্ঠান হয়।
দুটি বাঁশের ছাতা ধুমধামের সঙ্গে পুজো অর্চনা করে, ফুল দিয়ে সাজিয়ে শোভাযাত্রা করে
নিয়ে গিয়ে দামোদরের বুকে বালিতে পোঁতা হয়। একটি ছাতা উৎসর্গ হয় কাশীপুরের রাজার
নামে আর অন্যটি পুরীর রাজা গজপতি সিং এর নামে। বলা হয় ছাতা দুটি মাটিতে পোঁতার
পরেই দমকা হাওয়া উঠে ছাতাদুটিকে ফুল মালা সহ উড়িয়ে নিয়ে যায়।এটাই নাকি দেবতার
তুষ্ট হয়ে পুজা গ্রহণ করার লক্ষন।
এর পর আবার জে ডি
বেগলারের লেখায় পাওয়া যায় যে এই অঞ্চলের সঙ্গে প্রবল প্রতাপশালী মল্লরাজ বীর
হাম্বিরের(১৫৬৫ – ১৬২০) যোগাযোগ ঘটেছিল। পঞ্চকোট গড়ে পাওয়া দুটি লিপিতে নাকি এর
উল্লেখ আছে। আনুমানিক ১৬০০খ্রীস্টাব্দে এই ঘটনা ঘটে। তবে বীর হাম্বির গড় পঞ্চকোট
আক্ষরিক অর্থে জয় করেছিলেন নাকি কোন কুটনৈতিক/বৈবাহিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন কিনা
তা সঠিকভাবে জানা যায় না।
বেগলারের লেখা থেকেই
উধ্বৃতি দিলাম।
“The gates
of the fort had inscribed slabs let in, which would have fixed the date of
their erection and the name of the Rájá that reigned then; they are much
injured, but enough remains to fix the date of two of the gates,—the Duár Bándh
and the Khoribári gate; each slab consists of 6 lines of Bengali characters,
and they appear to be duplicates of each other; there is mention of a Sri Vira
Hámira, who, we know from other sources, reigned over a large tract of country,
extending in the south-west as far as Chátná near Bánkurá; the date is either
Samvat 1657 or 1659, the figure in the units place being alone doubtful through
wear, which would bring it to about 1600 A. D., when we know Mân Singh, Akbar's
General, was Viceroy of Bengal. The fort having thus been proved to date only
to Mân Singh, the temples, both on the hill and at the foot, cannot date
earlier, and that on the hill cannot, from its style, be of later date”
এছাড়াও সমসাময়িক পাঞ্চেত
রাজ্যের উল্লেখ আবার পাওয়া যার মুঘল সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে।তাঁর সেনাপতি মান
সিং সৈন্যসামন্ত নিয়ে এখানে এসেছিলেন পাঞ্চেত রাজাকে বশ্যতা স্বীকার করানোর
জন্য।তখনকার মত বেকায়দায় পড়ে সারেন্ডার করলেও মান সিং যেইমাত্র পিঠ ফেরালেন ওমনি
বেয়াড়া পাঞ্চেত রাজ নিজেকে স্বাধীন ঘোষণা করে দিলেন। এর পর শাহ জাহানের আমলে মুঘল
বাহিনী আবার ফিরে আসে এলাকা পুনরুদ্ধারের জন্য।এবার ব্যাপারটাকে পাকাপোক্ত করতে
শাহ জাহানের এক বাদশানামা ১৬৩২ বা ৩৩ সাল নাগাদ ঘোষিত হয়ে যায় যেটি অনুবাদ করলে এই
রকম দাঁড়ায়।
“বীর নারায়ণ, তিনশ ঘোড়সওয়ার সৈন্যদলের সেনাপতি, সুবে বিহারের অন্তর্গত
পাঞ্চেত রাজ্যের জমিদার, শাহজাহানের শরণ নিলেন।“
এ থেকে যদিও মনে হতে পারে যে পাঞ্চেত মুঘল সাম্রাজ্যের জায়গীরে পরিণত
হয়েছিল কিন্তু আবার মুঘলদেরই নথি থেকেই
জানা যায় পাঞ্চেত কখনই সরাসরি তাদের করদ রাজ্য ছিল না।একটা বাৎসরিক পেশকাশ বা করের
ব্যবস্থা থাকলেও তা রেকর্ডে থাকত না এবং পাঞ্চেতের নিজস্ব কর আদায় ব্যাবস্থাতেও
মুঘলরা নাক গলাতে পারে নি।
মুঘলদের পরে
তাঁদের সনদে বসানো সুবে বাংলার নবাবরা আসেন পাঞ্চেত রাজ্যের কর আদায়ের জন্য।
মুর্শীদকুলী খাঁয়ের সময় থেকেই খাজনা বা পেশকাশের হার বাড়তে থাকে আর সেই সঙ্গে
আদায়ের চাপও।মুর্শীদাবাদের এই আগ্রাসী চাপ এড়ানোর জন্যই সম্ভবতঃ বর্তমান গড়
পঞ্চকোটের দুর্গ ১৭০০ সাল নাগাদ পরিত্যক্ত্ হয়ে যায় এবং রাজধানী কেশরগড়ে সরিয়ে
নেওয়া হয়। এর পরেও যদিও কর আদায়ের জন্য বিলক্ষণ অশান্তি হয়েই এসেছে।পরবর্তীকালে
জেমস গ্রান্টের রিপোর্ট থেকে জানা যায় ১৭২৮ থেকে ১৭৪৩ সাল পর্যন্ত পাঞ্চেত রাজ
গরুড় নারায়ণ বছরে ১৮২০৩ টাকা খাজনা মুর্শীদাবাদের কোষাগারে জমা দিতেন। ১৭৪৩ সালের
পর আলীবর্দী খান আবার একদফা অতিরিক্ত করের বোঝা চাপান বার্ষিক ৩৩২৩ টাকা হিসেবে।এই
করতে করতে ১৭৬৩ সাল নাগাদ কর বাবদ প্রায় ২৩৬৭৩ টাকা দাঁড়ায় এবং ১৭৬৬ সালে মহম্মদ
রেজা খান প্রায় ৩০০০০ টাকা দাবী করেন যার মধ্যে আদায় হয়েছিল মাত্র ৫৯৬৯ টাকা।
এর মধ্যে ১৭৪১
সাল নাগাদ বাংলার ইতিহাসে এক গুরুত্বপুর্ণ সময় শুরু হয়। এই বছরেই সুবেবাংলার নবাব আলীবর্দী
খানের বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ বাধে ঘোড়সওয়ার মারাঠা বর্গীদের, যাদের নেতা ছিলেন
নাগপুরের শাসক রাঘোজী ভোঁসলে। বর্গী কথাটা আদতে মারাঠি শব্দ ‘বারগি’র অপভ্রংশ, যার
বাংলা মানে করলে দাঁড়ায় ‘ঝটিকা বাহিনী’। তা এখানে ব্যাপারটা হয়েছিল অনেকটা সেই খাল
কেটে কুমীর আনার মত।আলিবর্দী খান সুবে বাংলার তখতে বসেন ১৭৪০ সালে, সরফরাজ খানকে
হত্যা করে।এই দেখে রুস্তম জঙ্গ, যিনি ছিলেন উড়িষ্যার ‘নায়েব ই নাজিম’ আর সম্পর্কে
সরফরাজের শালা, খেপে উঠে প্রতিশোধের ফিকির খুঁজতে থাকেন। কিন্তু ক্ষমতায় থাকা
আলিবর্দীকে পেড়ে ফেলা অত সোজা ছিল না। রুস্তম জঙ্গের মতলব বুঝে আলীবর্দী বাহিনী
নিয়ে উড়িষ্যার দিকে রওয়ানা দেন এবং বালেশ্বরের কাছে এক যুদ্ধে যথেচ্ছ ঠ্যাঙ্গানী
দিয়ে তিনি রুস্তম জঙ্গকে উড়িষ্যা ছাড়া করেন। আপদ বিদায় হলে তিনি নিজের বিশ্বাসভাজন
ভাইপোকে তখতে বসিয়ে দেন। রুস্তম জঙ্গ ব্যাপারটা অতি অবশ্যই হজম করতে পারেন নি।
নিজের দমে কুলোবে না দেখে অগত্যা তিনি খুঁজেপেতে যোগাযোগ করেন নাগপুরের মারাঠা
শাসক রাঘোজি ভোঁসলের সঙ্গে। রাঘোজি ক্ষমতাবান শাসক ছিলেন এবং ধুরন্ধর লোক। তিনি
মারাঠা ঘোড়সওয়ার বাহিনী পাঠিয়ে আলিবর্দীর ভাইপোকে হটিয়ে রুস্তম জঙ্গকে ক্ষমতায়
ফেরান। আলিবর্দীও সহজে ছেড়ে দেওয়ার পাত্র ছিলেন না, তিনি আবার মুর্শীদাবাদ থেকে
বাহিনী পাঠিয়ে উড়িষ্যা উদ্ধার করেন। কিন্তু মারাঠারা ততদিনে বুঝে গেছে সুজলা সুফলা
বাংলাদেশে বিশেষ প্রতিরোধ ছাড়াই অতি সহজে লুটপাঠ চালিয়ে সিন্দুক ভরানো যায়। আলিবর্দী
যতদিনে উড়িষ্যা থেকে মুর্শিদাবাদ ফিরছেন তার মধ্যেই ভাস্কর পন্ডিতের নেতৃত্বে মারাঠা
বাহিনী বাংলায় ঢুকে পড়ে এবং সেটা নাকি এই গড়পঞ্চকোট হয়েই। এর পরের দশ বছর (১৭৪১ –
১৭৫১)বাংলার বুকে শুধু লুটপাঠ, অরাজকতা আর রক্তগঙ্গা বওয়ার ইতিহাস। নবাবের সেনার
সঙ্গে লুকোচুরি খেলা। নবাবের জগদ্দল সৈন্যবাহিনী যতক্ষনে ঘুরে তাকাচ্ছে ততক্ষনে
গেরিলা ওয়ারফেয়ারে দড় মারাঠা দস্যুর দল কাজ হাসিল করে বেরিয়ে যাচ্ছে। শোনা যায় এই
দশ বছরে এই বাংলায় প্রায় লাখচারেক লোক নাকি মারা পড়েছিল মারাঠাদের হাতে আর কত
ধনসম্পত্তি যে লুঠপাঠ হয়েছিল তার লেখাযোখা নেই। কিন্তু সে এক অন্য গল্প। মারাঠা
বর্গী বাহিনী গড়পঞ্চকোট হয়ে ঢুকলেও এই অঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির বিশেষ কোন
তথ্য পাওয়া যায় না যেটা দক্ষিণবঙ্গের ইতিহাসে বিশদে আছে।
The ruins of the Gate at Garh Panchkot |
The ancient watch tower at Garh Panchkot |
The Watch tower - A closure view |
The Watchtower is in dilapidated state and no effort is noticed for restoration |
The ruins of the Rani Mahal at Garh Panchkot |
এর পরে এলেন লর্ড
কর্ণওয়ালিস। তিনি ছিলেন ইংল্যান্ডের জমিদার মানুষ। জমিদারী ব্যবস্থায় খাজনা আদায়ের
পদ্ধতি তাঁর ভালোই জানা ছিল। অতএব কালবিলম্ব না করে ১৭৯৩ সালে তিনি তাঁর মগজনিঃসৃত
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করে দিলেন।এর সার কথা হল জমির মালিক তুমি (দেশীয় জমিদার),বংশপরম্পরায়
ভোগ করতে পারবে, দান করতে পারবে যা খুশী। প্রজাদের থেকে রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব
তোমার। শুধু প্রশাসন আর পুলিশ মানে গভর্ন্যান্স কোম্পানির হাতে। জমির মালিকানা
পেলে শর্ত একটাই, নির্দিষ্ট দিনে সুর্যাস্তের আগে চুক্তি মত খাজনার টাকা পৌঁছে
যাওয়া চাই ট্রেজারীতে, নইলেই জমিদারী নট। এই থেকেই তৈরী হল জমিদার শ্রেণী যার
বিলোপ অবশেষে হয় দেশ স্বাধীন হওয়ার পর।
বহু অশান্তি আর
রক্তপাতের পথ পেরিয়ে অবশেষে জঙ্গলমহলের রাজাদের ধরে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নামে এই
ছাতার তলায় জমিদারী স্বত্বভোগ এবং কর আদায়ের কাজে লাগিয়ে দেওয়া হল, সঙ্গে
সুর্যাস্ত আইনের চোখ রাঙানী, সময়ে খাজনা না জমা দিলে রাজত্ব বিলক্ষন যাবে। বিগত
প্রায় চার দশক ধরে চলে আসা বৈরীতা এতে মিটল না, অসন্তোষ বাড়তেই লাগল। চিরস্থাযী
বন্দোবস্ত কায়েম হওয়ার পর গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত গজিয়ে উঠল সুযোগসন্ধানী এক দালাল
শ্রেনী। দালাল বৃত্তি চিরন্তন, অতএব তখনও ছিল। এই ব্যাপারে কিছু বঙ্গজ ভদ্রজন
বিশেষ রুপে হাত পাকিয়ছিলেন।এর মধ্যে অগ্রনী ছিলেন রামসুন্দর মিত্র। এদের কাজ বা
মোডাস অপারেন্ডি হল এই সব দেশীয় রাজা বা জমিদারদের বোঝান যে খাজনা ভরার ব্যাপারে
বিশেষ চিন্তা করার কোন ব্যাপার নেই, তাঁদের সঙ্গে ইংরেজ প্রভুদের ভালোই বন্দোবস্ত
আছে অতএব কিছু অর্থের বিনিময়ে তাঁরাই দ্বায়িত্ব নিয়ে খাজনার ব্যাপারটা ‘ম্যানেজ’
করে নেবেন।এরপর খেলাটা দু দিকেই শুরু হল, একদিকে দেশীয় রাজা জমিদারদের থেকে ঘুষ খাওয়া
আর অন্যদিকে ম্যানেজ তো দুরের কথা,ইংরেজ প্রভুদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এদের ডিফল্টার
দেখিয়ে, ভুমিপুত্রদের জমি নিলামে তুলিয়ে সেই নিলামেই নিজেরা ঢুকে একের পর এক
জমিদারী এনারা নামে বেনামে দখল করতে লাগলেন।গল্পটা চেনা চেনা লাগছে কি? একালের কাহিনীর
সঙ্গে মিল পাচ্ছেন নিশ্চই? আসলে ব্যাপার হল ওই “সেই ট্র্যাডিশান সমানে চলছে।“ এই
খেলার বলি হয়েছিলেন গড়পঞ্চকোটের রাজাও। রেকর্ড থেকে জানা যায় ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী
বন্দোবস্তের দরুণ তাঁদের বার্ষিক খাজনা ধার্য হয়েছিল ৫৫,৮০০ টাকা। সেই সময়ের
অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে সময়মত ট্যাক্সো দিতে
না পারায়, বা না চাওয়ায় ১৭৯৫ সাল নাগাদ সুর্যাস্ত আইনে জমিদারী নিলামে চড়ল।তাঁদের
কোন প্রতিবাদই গ্রাহ্য হয় নি। কিন্তু দালাল বা খরিদ্দার যেই বা জমিদারী কিনেছিলেন
তাঁদের আর দখল নেওয়ার বিশেষ চাড় দেখা যায়নি। হতে পারে দখল নিতে এলে পাঞ্চেত
রাজাদের পাইক বাহিনীর হাতে বেদম ঠ্যাঙানি খাওয়ার চান্স ছিল। এমনিতেই চুযাড় আর পাইক
বিদ্রোহের আগুনে তখন পুরো জঙ্গল্ মহল জ্বলছে, চতুর্দিকে চুড়ান্ত অরাজকতা, লুঠপাঠ
হত্যা অবাধে চলছে। সাধারণ মানুষও বৃটিশ আর তার দালালদের ওপর বেজায় খাপ্পা ছিল,পাঞ্চেত
আর ঝালদা অঞ্চলের আদিবাসী সর্দাররা চাষীদের বলেই দিয়ছিল কোম্পানীকে কোনরকম কর না
দেওয়ার জন্য। অতএব ছলচাতুরী করে নিলামে রাজ্য কিনে ফেললেও এই টালমাটাল সময়ে দখল
নেওয়ার হঠকারিতা দেখাতে পারে নি।এছাড়া কোম্পানীরও বিশেষ সাহায্য এ সময় পাওয়া যেত
না। পাঞ্চেতের এই হাল দেখে তৎকালীন মানভুমের অন্যান্য জমিদাররাও ভয় পেয়ে যান যে
তাঁদেরও এমন পরিণতি হতে পারে এবং এই ভয় থেকেই পাঞ্চেত রাজের পিছনে মানভুম, বরাভুম,
ছাতনা এবং সিংভুমের জমিদাররা একযোগে দাঁড়িয়ে যান। ব্যাপার বেগতিক দেখে তখনকার
বৃটিশ কালেক্টর পিছু হটেন এবং পাঞ্চেতের সঙ্গে সমঝোতায় আসেন। এই সুযোগে তৎকালীন
রাজা গৌরনারায়ণ ১৭৯৯ সালে ফের রাজ্যের দখল
নেন।
পরিস্থিতি
অনেকটাই থিতিয়ে আসে এই ১৭৯৯ সালেই দ্বিতীয় চুয়াড় বিদ্রোহ দমনের পর। এর পর থেকেই
দেশীয় রাজারা বশ্যতা মেনে নেন এবং একটা মোটামুটি স্থিতবস্থা তৈরী হয়। যেহেতু
পাঞ্চেত রাজারা বরাবরই স্বাধীনচেতা ছিলেন সেজন্য নবাবদের বা বৃটিশদের বশ্যতা একেবারে মেনে
নেওয়াও তাঁদের পক্ষে সম্ভব হয় নি। এজন্য খিটিমিটি লেগেই থাকত এবং হয়ত এই চলতে থাকা
অশান্তির দরুনই পঞ্চকোটের রাজধানী বারবার জায়গা বদল করেছে। আজকে যে গড়পঞ্চকোটে
আমরা মন্দির আর পাহাড়ের ওপর গড় দেখি সেই জায়গাটি ১৭০০ সালেই পরিত্যক্ত হয়েছিল।
শেষবার সম্ভবতঃ ১৮৩২ সালে রাজা জগজীবন সিং দেও পুরুলিয়ার হুড়ার কেশরগড় থেকে বসত
সরিয়ে আনেন পুরুলিয়ারই কাশীপুরে।এর পরই পাঞ্চেত রাজাদের ইতিহাস আবার শুরু হয়
কাশীপুরকে ঘিরে। তবে এটা নিয়েও দ্বিমত আছে যে কাশীপুরের রাজপরিবারই পঞ্চকোট রাজপরিবারের সঠিক উত্তরাধিকারী কিনা।
এর পরের কাহিনী
রাজা নীলমনী সিং দেও এর। কাশীপুরের রাজপরিবারের পত্তন হয়েছিল রাজা নীলমণি সিং দেও
এর হাত ধরে। গল্প আছে তাঁর জন্ম কোন এক রাজপরিবারে হয়েছিল এবং তিনি কোন কারণে শিশু
বয়সে পরিত্যক্ত হয়ে স্থানীয় আদিবাসীদের কাছে মানুষ হন এবং পরে নিজের ক্ষমতাতে
কাশীপুর রাজ্যের পত্তন করেন। এবার হতে পারে আদতে তাঁর জন্ম পাঞ্চেত রাজ বংশেই
হয়েছিল। কিন্তু কাশীপুরের রাজবংশে নীলমনী সিং দেও এর পুর্বসুরীদের ইতিহাস বা বংশপরিচয়ে
একটা মিসিং লিঙ্ক বা প্রামাণ্য তথ্যের অভাব রয়ে গেছে যা সরাসরি পাঞ্চেতের রাজবংশের
সঙ্গে যোগাযোগ দেখাতে পারত। অন্তত আমি কিছু খুঁজে পাইনি।
The Kashipur Raj Palace at Kashipur near Adra Purulia |
এই নীলমণী সিং
দেও এর সঙ্গেও প্রথম দিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর বিশেষ সদ্ভাব ছিল না। ১৭৫৭ সালে
যখন সিপাহী বিদ্রোহের শুরু সেই সময় বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর ফৌজের সঙ্গে তাঁর
লড়াইয়ের ইতিহাস আছে এবং এর জেরে তিনি আলিপুর জেলে বন্দী ছিলেন একসময়।এরপর যখন
কোম্পানীর হাত থেকে ভারতের শাসনভার রাণীর হাতে আসে তখন সরকারী নীতি অনুসারে দেশীয়
জমিদারদের বংশানুক্রমিক ভাবে চলে আসা জমির অধিকারকে মান্যতা দিয়ে, তাঁদের উপাধি
ইত্যাদি দিয়ে তুষ্ট করে বশে রাখাই দস্তুর ছিল। এই ধারাতেই ১৮৬১ সালের ৭ই ডিসেম্বের
নীলমণি সিং দেওকে ‘রাজা অফ পাঞ্চেত’ (Rajah of Panchet) উপাধি দিয়ে সনদ প্রদান করা
হয়। পুরোন নথি থেকে জান যায় তৎকালীন আন্ডার সেক্রেটারি এইচ বেল ছোটনাগপুরের
কমিশনারকে এই সম্পর্কে একটি সরকারী নোটিফিকেশান দেন যাতে পাঞ্চেতের জমিদার নীলমনী
সিং দেওকে ‘রাজা’ উপাধি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এবং সেই মত অভিভাষন করার অনুরোধ করা
হয়েছে।
Closure view of Kashipur Raj Palace near Adra Purulia |
এই কাশীপুরের
রাজা নীলমণি সিং দেও এর আমন্ত্রণেই পাঞ্চেতে আসেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। তিনি
এসেছিলেন ১৮৭২ খ্রীস্টাব্দে, প্রায় তাঁর জীবন সায়াহ্নে, রাজার আইনি পরামর্শদাতা বা
এস্টেট ম্যানেজার হয়ে।এবং এটাই তাঁর শেষ কর্মক্ষেত্র, কাটিয়েছিলেন প্রায় মাস আটেক।
গড়পঞ্চকোটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ছিলেন মধুকবি, এতটাই যে লিখে ফেলেন বেশ
কয়েকটি কবিতা যার মধ্যে আছে পঞ্চকোট গিরি, পঞ্চকোটস্য রাজশ্রী আর পঞ্চকোটগিরি
বিদায় সংগীত।
Intricate work on top of the rooftop over the main entrance at Kashipur Raj Palace |
নীলমণি সিং দেও
মারা যান ১৯০১ সালে।তাঁর মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসেন রাজা বাহাদুর জ্যোতিপ্রকাশ সিং
দেও। আজকের যে কাশীপুর রাজবাড়ী আমরা দেখি সেটি এনারই তৈরি করা। ইনি মারা যান ১৯৩৪
সালে। এর পর একে একে সিংহাসনে বসেন যথাক্রমে রাজা কল্যানী প্রসাদ সিং দেও, রাজা
শঙ্করী প্রসাদ সিং দেও এবং রাজা ভুবনেশ্বরী প্রসাদ সিং দেও।শেষ রাজা ভুবনেশ্বরী
প্রসাদ ১৯৭৪ সালে অবিবাহিত অবস্থায় মারা যান।
মোটামুটি এই হল
পাঞ্চেত রাজবংশের আটশো বছরের ইতিহাস আর উত্থানপতন।
এবারে ইতিহাস
ছেড়ে আবার ফিরে আসি বর্তমান গড়পঞ্চকোটের পাহাড়ী ভূমিতে।
প্রকৃতি
প্রেমিকদের জন্য গড়পঞ্চকোট অসাধারণ জায়গা। এবারে গিয়ে পড়েছিলাম ঘোর বর্ষায়। এর আগে
গেছি শীতে আর বসন্তে। পাঞ্চেত পাহাড় আর বনভুমি প্রত্যেক ঋতুতে রূপ আর রং পালটায়।
শীতে জঙ্গলের পাতা ঝরা রুক্ষ বসন, বসন্তে বনে পলাশের আগুন আর বর্ষায় শুধু ঘন
সবুজের ক্যানভাস।
The Panchet Hill |
পাহাড়ের
ব্যাকগ্রাউন্ডে পঞ্চরত্ন মন্দিরটি ফোটোগ্রাফারদের নয়নের মণি। এর আগে ২০০৭ সালে এসে
দেখেছিলাম জরাজীর্ণ ভগ্নদশা। শিখরগুলি ভেঙ্গে পড়ছে, ইঁট বার করা দেওয়ালে টেরাকোটার
কাজের আর কিছুই প্রায় অবশিষ্ট নেই।বট, অশ্বত্থের শিকড় আষ্ঠেপৃ্ষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে। আরও
অনেক বছর আগে যাঁদের আরও ভালো অবস্থায় মন্দিরটিকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে তাঁদের
লেখায় জেনেছি মন্দিরের গায়ের কাজ প্রাক ইসলাম যুগের ধারায় করা। এবারে গিয়ে দেখলাম
সেই জীর্ণদশা আর নেই, মেরামত হয়েছে।মন্দির এখন ফিটফাট, কিন্তু সেই মেরামতি কতটা
পুরাতাত্বিক সংরক্ষনের কৌশল মেনে করা হয়েছে তাতে সন্দেহ আছে।আমি দেখলাম মন্দিরের
গা, শিখর এবং রত্নগুলি সিমেন্ট মেরে লেপেপুঁছে দেওয়া হয়েছে।অন্যান্য
স্ট্রাকচারগুলো যেমন জোড় বাংলা মন্দির, রানী মহল, নজর মিনার সেগুলির ওপর এখনও কোন
কাজ হয়নি এবং যথারীতি ভগ্নদশায়। গরম আর অস্বাভাবিক আদ্রতার কারণে পাহাড়ের ওপরের
পাথরের গড়টা আর এবার দেখা হয় নি। তবে শেষবার যখন এসেছিলাম সম্ভবত ২০০৭ সাল নাগাদ
তখনও জায়গাটার একটা শান্ত সৌন্দর্য ছিল। প্রায় জনমানবহীন পাহাড়ের গায়ে ভগ্নপ্রায়
মন্দির আর সৌধগুলো একটা অদ্ভুত বিষন্নতা মেশানো ভালোলাগা তৈরী করত, জায়গাটার
প্রাচীনত্ব অনুভব করা যেত, মনে হত যেন ইতিহাসের পাতায় ঢুকে গেছি। কিন্তু এবারে
দেখলাম সেই পরিবেশটাই নষ্ট হয়ে গেছে, মনে হল যেন বড্ড বেশী ভিড় আর হৈ হট্টগোল, জায়্গাটার
সেই চরিত্রটাই পালটে গেছে। অনেক আলো লেগেছে, চতুর্দিকে ইলেক্ট্রিকের পোস্ট, সোলার
প্যানেল আর তারের জড়াজড়ি। রানী মহলের সামনে একটা খোলা সিমেন্টের মঞ্চ করা হয়েছে। রাস্তার
ধারে চা সিগারেটের বেশ কিছু দোকান, মায় ভাতের হোটেলও আছে। নজর মিনারের পিছন দিকটায়
বোধহয় সরকারী উদ্যোগেই একটা কুৎসিত দর্শন রিসোর্ট তৈরী হয়েছে। উঁচু পাঁচিল, তার
ওপর পাকানো কাঁটাতার, একদিকের ওয়াচটাওয়ার সব নিয়ে মনে হল ঠিক যেন জেলখানা।আর এই
বিপন্ন পুরাতাত্ত্বিক স্ট্রাকচারগুলোর এত কাছেই কার বুদ্ধিতে যে রিসর্ট তৈরী করতে
হল তা মাথায় ঢুকলো না। আমাদের দেশে আকাট টুরিস্টের তো অভাব নেই যাঁরা ঐতিহাসিক
সৌধের দেওয়াল দেখলেই নিজেদের অমরপ্রেমকথা খোদাই করতে শুরু করে দেন বা সুযোগ সুবিধা
বুঝে ইতিউতি দেখে ইঁট পাথর থেকে শুরু করে আরও দামী কিছু পেলেই ট্রফি হিসেবে বাড়ী
নিয়ে যান।
যাক সেসব কথা,
উন্নয়নের ধাক্কা, ট্যুরিজমের খাতিরে এটুকু মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। শুধু
রক্ষণাবেক্ষণ যাতে ঠিক মত হয় সেটাই কাম্য।
শুধু বাঁধের দিকে
যাওয়ার মূল রাস্তাটা থেকে ছেড়ে পাঞ্চেত পাহাড়ের ঠিক নীচে বেড় দিয়ে যে রাস্তাটা
মন্দিরের দিকে গেছে সেটা এখনও একই রকম সুন্দর আছে। দুপাশে ঘন জঙ্গলের চাঁদোয়া,
মাঝে মাঝে একদুটো করে গ্রাম, স্কুলবাড়ী,আদিবাসী মানুষজনের যাওয়া আসা, সবমিলিয়ে
ছবির মত। পারলে গাড়ী ছেড়ে এই রাস্তা ধরে হাঁটতে থাকুন, মন ভালো করা অভিজ্ঞতা হবে।
বসন্তে এই রাস্তার দুধারে বাঁধভাঙ্গা পলাশের ঢল নামে, মহুয়ার মাতাল গন্ধে ম ম করে
পাঞ্চেতের নিঝুম জঙ্গল। এই রাস্তার ওপরই বনদপ্তরের রিসর্টের পাশ দিয়ে একটা কাঁকুরে
রাস্তা উঠে গেছে পাহাড়ের ওপর। প্রায় সাড়ে সাত কিলোমিটার চড়াই পথ। বুকে দম আর
হাঁটুতে জোর থাকলে বনপথ বেয়ে উঠে যেতে পারেন পাহাড় চুড়ায়। উপর থেকে ছোটনাগপুরের
ঢেউখেলানো মালভূমি আর পাঞ্চেত জলাধারের অসামান্য ভিউ পাওয়া যায়। পাহাড়ের গায়ে
জঙ্গলে একটু খেয়াল রাখলেই চোখে পড়বে অসংখ্য প্রজাতির পাখী আর রংবেরঙের প্রজাপতি। আর
নেহাত হেঁটে ওঠার ধকল যদি না নিতে চান তাহলে একমাত্র উপায় সঙ্গে যদি ফোর হুইল
ড্রাইভ এসইউভি গাড়ী থাকে। আডভেঞ্চারের নেশায় অফ রোডিং করে উঠতে পারেন। তবে
শক্তপোক্ত এসইউভি ছাড়া অন্য কোন ছোট গাড়ীতে একেবারেই চেষ্টা করবেন না। আর যাই করুন
নেমে আসতে হবে অন্ধকার হওয়ার আগেই।
এর আগে যখন
গিয়েছিলাম গড়পঞ্চকোটে সেখানে থাকার জায়গা ছিল মাত্র দুটি। একটি পলাশবীথি ইকো
রিসর্ট, স্থানীয় একটি ছেলে চালাত। রিসর্ট বলতে যেমন ছবি মনে ভেসে ওঠে তেমন নয়,
সাধারণ ঘরোয়া বন্দোবস্ত ছিল, এখন কি অবস্থা জানি না। এবারে দেখা হয়নি।আর তখন সদ্য
হয়েছিল ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশানের রিসর্ট। কিন্তু এই ২০১৭ তে গিয়ে দেখলাম
পাঞ্চেত পাহাড়ের নিচে আরও দুটো বড় বড় রিসর্ট খুলে গেছে এবং তাতে সমস্ত বিলাস
ব্যাসনের সুবিধাও আছে।অতএব টুরিস্টের ভিড় বাড়বে এ আর আশ্চর্য কি।
View of Panchet Hill from EcoTourism Resort |
সবকটারই ঠিকানা
নিচে দেওয়া রইল। লিংকে ক্লিক করলে ওয়েবসাইটে সব তথ্য পেয়ে যাবেন।
Panchet Residency
Garh Panchakot Eco-Tourism
West Bengal Forest Development Corporation Limted Nature Resort
Palash Bithi Eco Resort
Address: Garh Panchakot, Village: Baghmara, Rampur, Neturia, Puruliya, West Bengal 723121Phone: 080017 02087
সবশেষে সুধী পাঠকবর্গকে জানাই আমার এই লেখাটিকে কিন্তু গড়পঞ্চকোটের ইতিহাসের কোন প্রামাণ্য দলিল হিসেবে না ধরাই ভালো। আমি গবেষক নই, এমনকি ইতিহাসের ছাত্রও নই। নেহাতই কৌতুহল বশতঃ অন্তর্জাল ঘেঁটে এবং কিছু মানুষের সহায়তায় কিছু তথ্যসুত্র একত্র করে আপন খেয়ালে এটা লিখি। এই সব সুত্রের সত্যতা যাচাই করার সুযোগ, সময় এবং মেধা কোনটাই আমার ছিল না। এছাড়া অনেক কিছুই আছে যেগুলো আসলে মিথ, লোকমুখের চলে আসা কল্পকাহিনী, তাতে সত্যের ভাগ খোঁজা নিতান্তই দুষ্কর। কিন্তু আমার মনে হয়েছিল সবকিছুর মিশেলে পঞ্চকোটের ইতিহাস যথেষ্ট রোমাঞ্চকর আর ঠিক এই ব্যাপারটাই আমাকে টেনেছিল। সেজন্য কিছু তথ্য আর তার সঙ্গে কিছু আপন মনের মাধুরী মিশায়ে এই লেখা।তথ্যসুত্রগুলির লিঙ্ক নিচে দিলাম উৎসাহী পাঠক যদি নিজেরা যাচাই করতে চান।
ভালো লাগলে শেয়ার
করবেন এটাই প্রার্থনা।
তথ্যসূত্রঃ
তথ্যসূত্রঃ
What a pity that such masterpieces rot in our country due to official apathy and disinterest, while we visit distant lands to marvel at simple restorations.
ReplyDeleteWhat a pity that such masterpieces rot in our country due to official apathy and disinterest, while we visit distant lands to marvel at simple restorations.
ReplyDeleteSir,
ReplyDeletehats off to you for this compilation.
I have started reading your blog recently, if you see my this comment, please know that I am praising all of your write ups fro the detailing and effort.
Thanks again, please keep writing.
This comment has been removed by the author.
ReplyDeleteSome information provided wrong. Raja bhubaneswari prasad singh deo was married and had four sons
ReplyDeleteঅসাধারন, আমি নিজে পুরুলিয়ার ছেলে আমি এসব বিষয়ে খুই আগ্রহী।। অনেক জাইগা থেকে অনেক মানুষের কাছ থেকে পঞ্চকোট ও কাশিপুর সম্পকে জানার চেস্টা করেছি কিন্তু পারিনি। আজ আমার জানার অনেকটা খিদা মিটে গেল।
ReplyDeleteগতকালকেই পঞ্চকোট পাহাড়ের একেবারে ওপর পর্যন্ত উঠেছিলাম। অত্যন্ত রোমাঞ্চকর। তবে সেখানকার ইতিহাস প্যায় পুরোটাই আমার অজানা। আপনার লেখা পড়ে অনেকটাই সমৃদ্ধ হলাম। বাকি লোকমুখে শোনা, কিছু বইয়ে পড়া গড় পঞ্চকোটের ইতিহাস, যার বেশিরভাগই একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বলে। তাই প্যকৃত সত্য কী, তা জানি না। তবে ওখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ আমাকে বারবার টানে। বারবার তাকে নতুন করে আবিষ্কার করি।
ReplyDeleteOnek ki6u jante parlam onek dhonyobad
ReplyDelete